প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ১১:৬
রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোর কারণে চরগুলো ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে চরবাসীরা গবাদিপশু ও তাদের মালপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিকটস্থ লোকালয়ে চলে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি দিন দিন সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে।
পাউবো সূত্র জানায়, ২৪ জুলাই থেকে পদ্মার পানির উচ্চতা বাড়তে শুরু করে। ওইদিন পানি ছিল ১৬.৩৫ মিটার। পরে কিছুটা কমলেও ৩১ জুলাই থেকে আবার বৃদ্ধি পায় এবং বর্তমানে তা অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং বাসিন্দারা তাদের সম্পদ বাঁচাতে ব্যস্ত।
চর খিদিরপুরের বাসিন্দা গাজী তরিকুল ইসলাম বলেন, “পানি বেড়ে চরগুলো তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে গেছে, কিন্তু গবাদিপশুদের জন্য খাদ্যের অভাব তৈরি হয়েছে।” তার এই বক্তব্য চরবাসীদের দুঃশ্চিন্তার কথা প্রকাশ করে।
অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দা ইমতিয়াজ মেহেদী হাসান জানান, “প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। নৌকায় করে মালামাল সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে চলে গেছে, কেউ ভাড়া বাসায় উঠেছে। যারা গবাদিপশু রাখে তারা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন। এখনও অনেক পশু চরেই রয়েছেন।”
পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের সদস্য মো. সহিদুল বলেন, “বেশ কয়েকটি চর তলিয়ে গেছে। অনেকের বাড়ির আশেপাশে পানি চলে এসেছে। গবাদিপশু সরানোয় সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে ক্ষতি বেড়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক জানান, সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৭.৩৯ মিটার, যা বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি। তিনি জানান, এখনো পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে চরবাসীদের অবকাঠামোগত সুবিধা ও জরুরি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে কাজ চলছে। গবাদিপশু রক্ষা ও খাদ্য সরবরাহে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
অবস্থা গুরুতর হওয়ায় স্থানীয় জনগণের মাঝে উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা বাড়ছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে দীর্ঘমেয়াদে তাদের জীবনযাত্রায় বড় প্রভাব পড়বে। এখন সময় সঠিক পরিকল্পনা ও দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের।