প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ১৫:৫
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিট পুলিশিং সভায় পুলিশের পাশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে বসানো এবং তার বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের ভূজপুর এলাকায় অনুষ্ঠিত ওই সভায় এমন দৃশ্য দেখা যায়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল থানার এসআই এবং আশিদ্রোন ইউনিয়নের বিট ইনচার্জ বাবলু কুমার পাল। তার পাশেই বসানো হয় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মিয়াকে। শুধু বসানোই নয়, ফরিদ সভায় বক্তব্যও দেন। তার বক্তব্য চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করলে বিষয়টি দ্রুত ভাইরাল হয়।
উল্লেখযোগ্য যে, ফরিদ মিয়া এক মামলায় গ্রেফতার হয়ে চার মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হন। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, জেল থেকে বের হওয়ার সময় তিনি কর্তৃপক্ষকে অর্থ প্রদান করে পুনরায় গ্রেফতার এড়িয়ে যান, যদিও এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফরিদ মিয়া অতীতে ঘুষের বিনিময়ে সালিশি রায় দিয়ে একপক্ষকে অন্যায়ভাবে জয়ী করার অভিযোগে ব্যাপকভাবে আলোচিত ছিলেন। কেউ কেউ বলছেন, তিনি টাকা দিয়ে ন্যায়কে অন্যায়ে এবং অন্যায়কে ন্যায়ে পরিণত করতেন। এইসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই তার বিচার দাবি করছেন।
ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা থানার এসআই বাবলু কুমার পালকে প্রত্যাহারের দাবি জানান। তাদের অভিযোগ, পুলিশের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন ভূমিকায় তারা উদ্বিগ্ন।
এদিকে বাবলু কুমার পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফরিদ মিয়া যে আওয়ামী লীগ নেতা তা তার জানা ছিল না। বর্তমানে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি দাবি করেন। তবে তার এ বক্তব্যে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে এখন শুধু এই ঘটনাই আলোচনার কেন্দ্রে। অনেকেই পোস্টে মন্তব্য করছেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের পুলিশের মঞ্চে স্থান দেওয়া ও বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ থাকলে বিট পুলিশিংয়ের নিরপেক্ষতা কোথায়? সব মিলিয়ে শ্রীমঙ্গলের এ ঘটনা নতুন করে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।