প্রকাশ: ৯ জুলাই ২০২৫, ১৫:৪৭
নোয়াখালীতে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা ভারী বর্ষণে বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে এবং এরই মধ্যে জেলার বেশ কিছু এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। একইসাথে ফেনীর মহুরী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা
হয়েছে এবং আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার চারটি উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
জলাবদ্ধতা সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে সদর, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর ও কবিরহাট উপজেলায় যেখানে রাস্তা ও অলিগলি পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলা শহর মাইজদীতে বিভিন্ন মহল্লা যেমন স্টেডিয়াম পাড়া, ফকিরপুর, হাউজিং এলাকা ও জেলখানা রোডে হাটুসমান পানি জমে আছে এবং নিচতলার ঘরগুলোতেও পানি ঢুকে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে জেলার পানি মাত্র একদিনেই ১৭ সেন্টিমিটার
বেড়েছে, যা বিপদসীমার মাত্র এক সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের মতে, নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এবং পানি নিষ্কাশনের নালা ও জলাশয় গুলো দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছরই এ দুর্ভোগ দেখা দেয়। বসুরহাট পৌরসভাসহ জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার স্কুল, হাসপাতাল
গেইটসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জেলা প্রশাসক জানান, তিনি নিজেই বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে সচেতন মহলের মতে, প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকেও নিজেদের এলাকার নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখতে হবে এবং জলাশয় রক্ষা ও ড্রেন সংস্কারে স্থানীয়দের উদ্যোগী হওয়া জরুরি। এই সংকট থেকে উত্তরণে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।