প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১৮:৯
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর গ্রীনল্যান্ড লিমিটেড কারখানায় চুরির অপবাদে মো. হৃদয় (১৯) নামে এক শ্রমিককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হৃদয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শুকতার বাইদ গ্রামের বাসিন্দা এবং ওই কারখানার মেকানিক্যাল মিস্ত্রি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটলেও তা প্রকাশ্যে আসে একটি এক মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, যেখানে দেখা যায় হৃদয়কে অফিস কক্ষের জানালায় রশি দিয়ে বেঁধে নির্মমভাবে মারধর করা হচ্ছে। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, মারধরের সময় কেউ কেউ হাসছে এবং একজন বলতে শোনা যায়,
"অনেক পিটানো হয়েছে, তারপরও কিছুই হয়নি, মরে যায়নি।" এ ঘটনার পর নিহতের পরিবার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযানে নামে এবং কারখানার এক শ্রমিক হাসান মাহমুদ ওরফে মিঠুনকে গ্রেফতার করে। তবে মামলায় কেউ নাম উল্লেখ না করায় বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তদন্তের স্বার্থে আরও গ্রেফতার শিগগিরই হবে। শ্রমিক হৃদয়ের ভাই লিটন মিয়া অভিযোগ করেন,
তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরদিন পরিবারের সদস্যরা কারখানায় এসে জানতে পারে যে শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এবং হৃদয়ের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
শ্রমিক হত্যার এই নৃশংস ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে শ্রমিক সমাজ এবং ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষও প্রতিবাদে মুখর হয়। এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিলে গ্রীনল্যান্ড লিমিটেড কর্তৃপক্ষ কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। তবে গাজীপুর শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে আগামী মঙ্গলবার থেকে কারখানা খুলে দেওয়া হতে পারে। নিহত হৃদয়ের পরিবার ও সহকর্মীরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়েছেন।