প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১১:৩০
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এক অজানা ভাইরাস জনিত রোগ, যার লক্ষণ জ্বর, গিরা ব্যথা, চুলকানি, পা ফুলে যাওয়া এবং সারা শরীরে ব্যথা। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে টেকনাফের গ্রামাঞ্চলে এবং আশপাশের এলাকায়। সাধারণ মানুষসহ চিকিৎসকরাও এই রোগের প্রকৃতি নির্ধারণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন, ফলে জনমনে এক ধরনের ভয় এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, প্রায় দেড় মাস আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই রোগ প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর তা ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা জানান, এ রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে হঠাৎ করে প্রচণ্ড জ্বর আসে, প্রতিটি গিরায় ব্যথা শুরু হয় এবং চলাফেরা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। কেউ কেউ জানান, তারা অন্যের সাহায্য ছাড়া প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতেও সক্ষম হননি। শুরুতে চিকিৎসকেরা নানা ধরনের এন্টিবায়োটিক দিয়েও রোগটি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অজানা ভাইরাসের উপসর্গ অনেকটাই চিকুনগুনিয়া বা ডেঙ্গুর মতো হলেও রক্ত পরীক্ষায় এসব রোগের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে না। রক্তের প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে, কিন্তু ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া ধরা পড়ছে না, যার ফলে রোগী ও পরিবারগুলো দারুণভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া একবার ভালো হওয়ার পর আবারও অনেকেই পুনরায় আক্রান্ত হচ্ছেন, বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা এই রোগে বেশি ভুগছেন।
নোয়াপাড়া গ্রামের ছৈয়দুল আমিন চৌধুরী বলেন, তার ছোট মেয়ের মাধ্যমে পুরো পরিবারই আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, ব্যথা ও খাবারে অরুচি ছিল প্রধান লক্ষণ। চিকিৎসকেরা প্যারাসিটামল ও ব্যথানাশক ছাড়া তেমন কোনো ঔষধ দিচ্ছেন না এবং লেবু, ডাব ও হালকা খাবারের পরামর্শ দিচ্ছেন।
টেকনাফের সাংবাদিক আবদুস সালাম জানান, জীবনে এমন ব্যথা ও দুর্বলতা তিনি আগে কখনো অনুভব করেননি। আকস্মিকভাবে জ্বর ও কাঁপুনির সঙ্গে শরীরের প্রতিটি অংশে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। এ অবস্থায় জনজীবনে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. প্রণয় রৌদ্র জানান, রোগটি ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে, তবে আতঙ্কিত না হয়ে রোগ দেখা দিলেই হাসপাতালে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে জানান।