মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় দুটি মন্দির থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও পূজার সামগ্রী চুরির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমার নেতৃত্বে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে চুরিকৃত মালামাল ও চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে ।
গত ১২ ও ২৬ জুন রাতে পৃথকভাবে বড়লেখার পাখিয়ালা এলাকার শ্রী শ্রী উদ্ধব ঠাকুরের আখড়া মন্দির এবং দক্ষিণভাগ সার্বজনীন দেবস্থলী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা মন্দিরের দরজার কড়া ভেঙে স্বর্ণালঙ্কার, পিতলের মূর্তি, কাসার বাসনসহ প্রায় ৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকার মালামাল লুট করে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রথমে রুহেল আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার তথ্যের ভিত্তিতে আবু তায়েব আহমদ সাজু, নুর হোসেন, জাকির হোসেন, আলাল মিয়া ও শাহ আলীকে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা সবাই পেশাদার চোর বলে দাবি করেছে পুলিশ ।
মাধবগুল এলাকার শাহ আলীর ভাঙারি দোকান ও অন্যান্য আসামিদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১১টি পিতলের ঘট, ৮টি কাসার থালা, ৫টি কাসার বাটি, ২টি পুষ্প থালি, ১টি পিতলের কলসিসহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী। এছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত কাটার, হাতুড়ি, হেমারসহ বেশ কিছু সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে ।
মন্দির কমিটির সভাপতি মঞ্জু লাল দে উদ্ধারকৃত মালামাল শনাক্ত করেছেন। তিনি জানান, চুরির শিকার মন্দির দুটি হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় স্থান। তবে পুলিশের মতে, এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক কোনো প্ররোচনা নেই। এটি সম্পূর্ণ চোরাচালান চক্রের কাজ ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক মামলা রয়েছে। দ্রুত আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে ।
স্থানীয়রা জানান, গ্রেফতারের পর এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে। তবে মন্দিরগুলিতে বাড়তি নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন ধর্মীয় নেতারা। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, মন্দিরের সুরক্ষায় বিশেষ টহল ব্যবস্থা করা হবে ।
উল্লেখ্য, গত দুই মাসে মৌলভীবাজারে এটিই সবচেয়ে বড় চুরির ঘটনা। পুলিশের সফল তদন্তে স্থানীয়দের মধ্যে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে চুরিকৃত স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারে আরও তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়েছে ।