প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ২১:৪৬
ঝালকাঠির সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের শংকর ধবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একাধিক মূল্যবান গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর হাওলাদার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১৫ জুন ঝালকাঠি সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে উত্তর কীর্ত্তিপাশা গ্রামের মো. শাহিন বেপারী এবং আরও ৭-৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি মিলে তিনটি রেইন্ট্রি গাছ কেটে ফেলেন। এসব গাছের বাজারমূল্য প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা বলে জানা গেছে।
ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকেই গাছ কাটা শুরু হয় এবং দুপুর ১টার দিকে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে বাধা দিতে গেলে অভিযুক্তরা হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এলাকা ত্যাগ করে। পরে সামাজিক মাধ্যমে ঘটনাটির ছবি ছড়িয়ে পড়লে ইউনিয়ন বিএনপির কয়েকজন নেতার নাম এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে ওঠে। অভিযুক্ত শাহিন বেপারী এক পর্যায়ে দাবি করেন যে, স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতা তাকে গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছেন, তবে পরে তিনি পরিচয় প্রকাশ না করেই মোবাইল বন্ধ করে দেন, যা এলাকাবাসীর সন্দেহ আরও ঘনীভূত করে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, শাহিন বেপারী গাছ কাটতে রাজি না হওয়ায় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বেলায়েত সরদারের ছেলে সুজন সরদার ও পানজু সরদারের ছেলে রেজাউল। ঘটনাটি প্রকাশে আসার পর শাহিন এখন ভীত ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তখনও তাকে হুমকি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকেও তৎপরতা শুরু হয়েছে। ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ঘটনার প্রকৃত তথ্য বের করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সরকারি বিদ্যালয়ের সম্পদ এভাবে লুণ্ঠন করা শুধু অপরাধ নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি চরম অবিচার। তারা দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন দুঃসাহস না দেখাতে পারে। প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এলাকাবাসী বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে।