প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১০:৪২
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে এক কলেজছাত্রী। রোববার সকালে বাবার মোটরসাইকেলযোগে কলেজে যাওয়ার পথে বোরকার আঁচল পেছনের চাকায় পেঁচিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন ওই শিক্ষার্থী এবং পরে মৃত্যু ঘটে তার।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম ইশরাত জাহান শান্তা (১৭)। সে হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী এবং জাহাজমারা ইউনিয়নের নতুন সুখচর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মো. আরিফের কন্যা। বাবার সঙ্গে কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিল শান্তা।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, সকাল বেলায় হিল্টন রোড এলাকায় পৌঁছালে শান্তার পরনের বোরকার নিচের অংশ বাবার মোটরসাইকেলের পেছনের চাকায় পেঁচিয়ে যায়। এতে সে ছিটকে পড়ে এবং বোরকার আঁচল গলায় ফাঁস লেগে মোটরসাইকেলের সঙ্গে টেনে প্রায় ২০-২৫ গজ দূর পর্যন্ত সড়কে হিঁচড়ে যায়।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে শান্তা ও তার বাবাকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় শান্তাকে ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে দুর্ভাগ্যবশত, উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকায় নেওয়ার পথে মেঘনা নদী পার হওয়ার আগেই শান্তার মৃত্যু হয়। হঠাৎ এমন এক দুর্ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাটি নিয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজমল হুদা জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন, তবে ভুক্তভোগী পরিবার পুলিশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ জানায়নি। ফলে এখনো থানায় কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরি হয়নি।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে মোটরসাইকেলে চলাচলের সময় পরনের কাপড় সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে মহিলাদের দীর্ঘ বোরকা বা ওড়না গাড়ির চাকা বা যন্ত্রাংশে জড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকার জন্য আরও সচেতন হওয়া জরুরি বলে মনে করছেন অনেকে।