প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ২০:২৪
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা পারভেজ আহমেদের মুক্তি ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা ও পৌর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কালিয়াকৈর বাজারে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন চাপাইর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ডিজি রব্বানী ও সূত্রাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নূর আলামিন। বক্তারা দাবি করেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিগত ১৬ বছরে বিএনপির যে আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে, তাতে কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৪ জুন ঘোষিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে পারভেজ আহমেদ ও সাবেক সভাপতি ভিপি হেলাল উদ্দিনকে শুধু সদস্য পদে রাখা দলীয় অবমূল্যায়ন।
এই ঘোষণার পরের দিন, পারভেজ ও হেলাল উদ্দিনের অনুসারীরা কমিটি বাতিলের দাবিতে মিছিল করে, অপরদিকে নতুন আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম সিকদার ও সদস্য সচিব এম আনোয়ার হোসেনের অনুসারীরাও পাল্টা আনন্দ মিছিল করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন। ঘটনার পর গাজীপুর ডিবি পুলিশ ভিপি হেলাল ও পারভেজ আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন হেলাল উদ্দিনকে মুক্তি দেওয়া হলেও পারভেজ আহমেদকে একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পারভেজ আহমেদকে দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করেন। তবে নেতাকর্মীরা দাবি করেন, এ সিদ্ধান্ত অন্যায় ও ষড়যন্ত্রমূলক। বৃহস্পতিবার বিকেলে দলের একাংশ আবারও বিক্ষোভ মিছিল করে পারভেজের নিঃশর্ত মুক্তি ও বহিষ্কার প্রত্যাহারের দাবি জানান।
স্থানীয় নেতারা বলেন, একজন পরীক্ষিত রাজনীতিককে হঠাৎ করে গ্রেফতার ও বহিষ্কার করায় তৃণমূলের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ সময় বক্তারা বলেন, পারভেজের অবদান ভুলে গেলে চলবে না, বরং আন্দোলন-সংগ্রামে যারা পরীক্ষিত তাদেরই নেতৃত্বে রাখা উচিত। এছাড়া তারা দাবি করেন, দলে বিভাজন না সৃষ্টি করে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি।
পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বিধান কৃষ্ণ বর্মন, যুবদল নেতা রিয়াজ মাহমুদ প্রমুখ। নেতারা বলেন, যদি দলের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। কালিয়াকৈরের তৃণমূল বিএনপির নেতারা জানান, দলের শৃঙ্খলার কথা বলে যারা মাঠের রাজনীতি থেকে দূরে, তাদের দিয়ে উপজেলা পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
তারা আরও বলেন, বিএনপির আন্দোলন সফল করতে মাঠে যাদের ঘাম ঝরেছে তাদের অবমূল্যায়ন করলে সংগঠনে ভাঙন ধরবে। সেইসাথে ভবিষ্যতে নেতৃত্বের প্রশ্নে তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ারও দাবি জানান তারা।