প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৫, ১৮:৭
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত রোববার রাতে দুই নেতাকে আটক করে। তাদের মধ্যে একজন হলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হেলাল উদ্দিন, যাকে সোমবার সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যজন হলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ, যিনি এখনও পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। ডিবি পরিদর্শক ফারুক জানান, তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ থাকায় আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনার পেছনে রয়েছে জেলা বিএনপির সম্প্রতি কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভা এবং জেলার আটটি ইউনিট কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত। এরপর জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মৌচাক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার এবং সদস্যসচিব এম আনোয়ার হোসেন। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব হন যথাক্রমে মামুদ সরকার ও মহসিন উজ্জামান। দুই কমিটিতে মোট ৪১ জন সদস্য রয়েছেন।
তবে উপজেলা কমিটি নিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ ও তার সমর্থকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরবর্তীতে রোববার সকাল থেকেই দুই পক্ষের সমর্থকরা পৃথক মিছিল করেন। এই বিক্ষোভের সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন, যাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দুপুর ১২টার দিকে ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভাজন ভবিষ্যতে আরও উত্তেজনার সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং দলকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে গঠিত নতুন আহ্বায়ক কমিটির প্রতি প্রত্যাশা থাকলেও অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ অবসান না হলে ভবিষ্যতে আরও জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। কালিয়াকৈরের রাজনৈতিক পরিসর এ মুহূর্তে দ্বিধাগ্রস্ত ও অস্থির। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে দলের নেতাদেরও সমঝোতার প্রয়োজন।