প্রকাশ: ১ জুন ২০২৫, ১৫:৫৭
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। শনিবার রাতের এই আবিষ্কারে খনিজ খাত নিয়ে নতুন করে আশাবাদ তৈরি হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক রোববার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বাপেক্সের অনুসন্ধানে এই খনিজ সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়।
এই অনুসন্ধানের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ১৯৮০ সালে প্রথমবারের মতো বাপেক্সের সিসমিক উপাত্তে গ্যাসের উপস্থিতির আভাস পাওয়া যায়। এরপর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নতুন করে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয় এবং ২০১৫-১৬ সালে ক্লোজ গ্রিড সিসমিক সার্ভে সম্পন্ন হয়। এই সকল তথ্য বিশ্লেষণ করেই চলতি বছরের জানুয়ারিতে জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খননের কাজ শুরু করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক জানান, ২৬০০ মিটার গভীর খননের পর অবশেষে কাঙ্ক্ষিত গ্যাসের স্তরে পৌঁছায় বাপেক্স। শনিবার রাতেই প্রাথমিকভাবে গ্যাসের অস্তিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। বর্তমানে সেখানে ডিএসটি (ড্রিল স্টেম টেস্টিং) চলছে এবং এই পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করেই গ্যাসের প্রকৃত মজুত নির্ধারণ করা হবে।
এই আবিষ্কারে গ্রামজুড়ে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা গ্যাসভিত্তিক শিল্পায়নের সম্ভাবনায় উচ্ছ্বসিত। তারা আশা করছেন, এর মাধ্যমে তাদের এলাকায় কর্মসংস্থান, উন্নয়ন এবং জীবনমানের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে।
প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট ছিল ১৬৮ কোটি টাকা, যার মাধ্যমে তিন মাস মেয়াদি অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গ্যাস উত্তোলন এবং ব্যবহারযোগ্যতা নির্ধারণে আরও কিছুদিন গবেষণার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন।
বাপেক্সের কর্মকর্তারা জানান, যদি পরীক্ষার ফল ইতিবাচক হয়, তবে এটি দেশের জ্বালানি খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হবে। একইসঙ্গে এটি ভবিষ্যতে গ্যাস আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহল এই খনির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ ও পরিবেশ রক্ষার দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের আবিষ্কার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি হতে পারে।