প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১১:৪৯

নোয়াখালীতে টানা ভারী বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির পরিমাণ। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে এই প্রবল বৃষ্টির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
জেলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলোর মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর, চরহাজারী, চরএলাহী এবং হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত জোয়ারে অনেক গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা হঠাৎ পানি বাড়ার কারণে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছেন।
হাতিয়া সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর এখনো উত্তাল। বড় বড় ঢেউয়ের আঘাতে উপকূলীয় বাঁধ ভেঙে পড়েছে এবং ঝুঁকিতে রয়েছে আরও কয়েকটি এলাকা। এমভি প্রাহিম নামের একটি ট্রলার চার কোটি টাকার পণ্য নিয়ে মেঘনা নদীতে ডুবে গেছে, এতে বিশাল ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত জোয়ারে নিম্নাঞ্চলের ধানক্ষেত, শাকসবজির খেত এবং মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। নিঝুম দ্বীপে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বনাঞ্চলের হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে চরম বিপদে পড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

জেলা শহর মাইজদীতেও বৃষ্টির দুর্ভোগ কম নয়। শহরের প্রধান সড়কগুলোসহ ফ্ল্যাট রোড, শিল্পকলা একাডেমি এলাকা ও হাকিম কোয়ার্টার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য পরিবার, এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের সব ইউনিটকে সতর্ক করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন ও রেডক্রিসেন্ট।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, বাঁধ রক্ষায় জরুরি সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছে, নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ফলে উপকূলীয় এলাকা এবং নিম্নাঞ্চলে উচ্চ সতর্কতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে।