পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের অন্যতম ব্যস্ততম হিলি স্থলবন্দর দিয়ে মসলা জাতীয় পণ্যের আমদানি বেড়ে গেছে। আমদানির পরিমাণ বাড়ার ফলে হিলি বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় মসলার দামে স্বস্তি ফিরেছে। প্রকারভেদে কেজিতে ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে মসলার, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির খবর বয়ে এনেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে জিরা, সাদা এলাচ, কালো এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ ও গোলমরিচের সরবরাহ অনেক বেশি। যার ফলে বাজারে বিক্রি মূল্যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা, যা আগে ছিল প্রায় ৯০০-১,০০০ টাকা। সাদা এলাচের দাম ৪০০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩,৮০০ থেকে ৫,০০০ টাকা কেজি দরে। কালো এলাচের দামও ২০০ টাকা কমে এখন ২,৬০০ টাকা প্রতি কেজি।
দারুচিনি প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৫৬০ টাকা, লবঙ্গ ১,৪০০ টাকা এবং গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ১,১০০ টাকা কেজিতে। বাজারে মসলা সরবরাহ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে খুশির আমেজ দেখা গেছে।
হিলি বাজারের মসলা বিক্রেতা লিটন বলেন, “এক-দেড় সপ্তাহ ধরে জিরাসহ প্রায় সব ধরনের মসলার দাম কমে গেছে। হিলি বন্দর দিয়ে মসলার আমদানি বেড়েছে, যার কারণে দামও কমে গেছে।” তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা হিলি বাজারে আসছেন—রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, রাজশাহী ও ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ক্রেতাদের মধ্যে কেনাবেচা শুরু হয়েছে, যা ঈদের আগমুহূর্তে আরও বাড়বে।
এছাড়া পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামেও স্বস্তি রয়েছে। দেশী পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকায়, আদা ৯০-১০০ টাকা এবং রসুন ১০০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বিক্রেতা মঈনুল ইসলাম বলেন, “এবার ঈদের আগে এসব পণ্যের দাম তুলনামূলক অনেক কম। ক্রেতাদের আগমনও ভালো। দাম কম থাকায় বিক্রিও ভালো হচ্ছে।”
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থেকে হিলি বাজারে আসা ক্রেতা শাওন বলেন, “মসলা কিনতে হিলি এসেছি, কারণ এখানে দামে কম এবং গুণগত মান ভালো। জিরা, এলাচ, দারুচিনি সবই আগের তুলনায় অনেক সস্তা পেয়েছি।”
হিলি কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দীন বলেন, “ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে হিলি বন্দরে মসলা জাতীয় পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দ্রুত খালাসের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করছে।” তিনি জানান, চলতি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ৪১ ট্রাকে ৭৫০ টন আদা এবং ১০৪ ট্রাকে ৩,১৩৫ টন জিরা আমদানি হয়েছে।
মসলার দাম কমায় সাধারণ মানুষের ঈদ বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। বিক্রেতা ও আমদানিকারকরা আশা করছেন, ঈদ ঘনিয়ে এলে বাজারে আরও চাঙ্গা ভাব আসবে।