প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১৯:১৫
মৌসুমি নিম্নচাপ ও টানা বৃষ্টিতে পিরোজপুরের জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। নদীভাঙন, পানি বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে জেলার একাধিক গ্রাম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেশ্বর ও কচা নদীর পাশের টগড়া ফেরিঘাটসহ নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, অনেক এলাকা পানিতে একেবারে নিমজ্জিত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের ওপর সৃষ্ট নিম্নচাপটি আরও গভীর হতে পারে। এতে উপকূলীয় এলাকায় বাড়তে পারে বৃষ্টিপাত, সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। সতর্ক সংকেতও দেওয়া হয়েছে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরে।
পিরোজপুর সদর এবং আশপাশের নিম্নাঞ্চলে পানির উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক উপরে উঠেছে। বিশেষ করে বলেশ্বর, কচা, কালিগঙ্গা ও মধুমতি নদীর পানির তোড়ে অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম।
অতিবর্ষণ ও জোঁয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি খাতও। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বোরো মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ ব্রি ধান, হাইব্রিড ধান ও ব্যাবিলনের মতো ধান এখন পানিতে নিমজ্জিত। বীজ তলা এক সপ্তাহ ডুবে থাকলে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলার অনেক স্কুল ও খেলার মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। ছাত্রছাত্রীদের স্বাভাবিক যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে বাধা পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে।
নদীর পাশের গ্রামগুলোতে বেড়িবাঁধ না থাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। পানি ঢুকে গবাদিপশু, মাছের ঘের ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। অনেক মাছচাষী বলেছেন, তাদের ঘেরের মাছ ভেসে গেছে, ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে তারা প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।
এমন অবস্থায় জেলার মানুষ এখন দ্রুত কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারি সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছেন।