মাদারীপুরে ১১ লাখ টাকার প্রতারণা, ক্লিনিক মালিক কারাগারে

গোপালগঞ্জের মধুমতি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক কামাল শেখের বিরুদ্ধে ১১ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত কামাল শেখ (৪৬) গোপালগঞ্জ সদরের ডিসি রোড কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা এবং করপাড়া ইউনিয়নের বনগ্রামের ইউনুস শেখের ছেলে। প্রতারণার শিকার হয়েছেন মাদারীপুর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে কর্মরত যুবক শুভ মৈত্র।

ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী শুভ মৈত্র জানান, তার বাবা নিত্যানন্দ মৈত্রর কাছ থেকে ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট গোপালগঞ্জে ব্যবসা পরিচালনার কথা বলে কামাল শেখ ১১ লাখ টাকা নেন। মাদারীপুর নতুন শহর এলাকায় সাক্ষীদের উপস্থিতিতে লেনদেন সম্পন্ন হয় এবং সেই সময়ের ভিডিও ধারণ করেন শুভ। আর্থিক নিরাপত্তা হিসেবে কামাল শেখ একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক প্রদান করেন, যা পরে ব্যাংক প্রত্যাখ্যান করে।

চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর আইনজীবীর মাধ্যমে উকিল নোটিশ পাঠানো হলেও কামাল শেখ কোনো সদুত্তর দেননি। ফলে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর শুভ মৈত্র মাদারীপুর আদালতে চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত (এনআই অ্যাক্ট) আইনে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন হাজির না হয়ে গোপনে জামিন নিতে গেলে ২০২৫ সালের ১৩ মে আদালতের বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মেঘদূত রাজ চক্রবর্তী বলেন, “প্রতারণার ঘটনায় সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ, সাক্ষ্য ও ব্যাংক চেক প্রত্যাখ্যান—সবই স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে আসামির দায়। আশা করি, ভুক্তভোগী সুবিচার পাবেন।”

ভুক্তভোগী শুভ বলেন, “আমাদের পরিবারের কষ্টের টাকা দিয়ে এভাবে প্রতারণার শিকার হবো, ভাবিনি। আমরা আমাদের অর্থ ফেরত চাই ও কামাল শেখের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”

প্রসঙ্গত, কামাল শেখের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে আরও একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বারবার একই ধরনের প্রতারণা ঘটাচ্ছেন তিনি। ফলে এবার তার জামিন না হওয়া এবং কঠোর আইনানুগ শাস্তি কার্যকর করার জন্য আদালত ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সাধারণ মানুষ।