পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জীবন এখন অনিশ্চয়তার অন্ধকারে। লোহালিয়া নদীর ক্রমাগত ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হয়ে যাচ্ছে তাদের বসতভিটা, আবাদি জমি আর স্বপ্ন।
বশির হাওলাদার থেকে মনির শিকদার পর্যন্ত নদীসংলগ্ন এলাকার প্রতিটি পরিবার এখন রাতের ঘুম হারাম করেছে। নদীর গর্জন আর পানির গর্জন তাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০০৭ সালের সিডরের ভয়াবহ স্মৃতি।
২০০৭ সালের সেই প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে এই এলাকার বেরিবাঁধ ভেঙে সাতজন প্রাণ হারিয়েছিলেন। এখন আবারও সেই দুঃস্বপ্ন ফিরে আসার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার দুপুরে নদীর তীরে ভাঙনকবলিত বেরিবাঁধে শতাধিক মানুষ সমবেত হয়েছিলেন মানববন্ধনে। 'আমাদের বাঁধ চাই, বাঁচতে চাই' স্লোগানে মুখরিত হয়েছিল পুরো এলাকা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, "নদী আমাদের ভবিষ্যৎ গিলে খাচ্ছে। বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি, ধর্মীয় স্থাপনা সবই এখন পানির গহ্বরে। রাতে শুয়ে থাকলেও ঘুম আসে না, কখন যে ঘরবাড়ি ভেসে যাবে সেই ভয়ে।"
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ ছাইফুর রহমান ছাইদী, জাকির মোল্লা, আজহার মাঝী ও জেবুন্নেছাসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। তারা দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, "আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। শিগগিরই সমাধানের আশা করছি।"
তবে স্থানীয়দের মতে, শুধু আশার বাণীই যথেষ্ট নয়। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই যদি বাঁধ নির্মাণ না হয়, তাহলে পুরো এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে নদীভাঙনে ইতিমধ্যেই অনেক পরিবার সর্বস্বান্ত হয়েছে। তাদের পুনর্বাসন ও জরুরি ত্রাণ সহায়তারও দাবি উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।
স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। না হলে সিডরের মতো আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।