প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১১:৫৬
ঝালকাঠি জেলা কারাগারে কারারক্ষী নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে চাকরিপ্রত্যাশীরা মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিক্ষুব্ধ চাকরিপ্রত্যাশীরা জানান, তাঁদের যথাযথ কাগজপত্র ও নির্ধারিত উচ্চতা থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা কেন্দ্রে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় এবং অনৈতিকভাবে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চাকরিপ্রত্যাশীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং অনেককেই শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুরসহ বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা চাকরিপ্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা নিয়ম মেনে পরীক্ষায় অংশ নিতে এসেছিলেন, কিন্তু তাদের সঙ্গে বাজে আচরণ করা হয়েছে। মিছিলকারীদের মধ্যে মাহফুজুর রহমান, মো. শাওন, ফাহিম, আবির কাজী, মো. ছাব্বির এবং রাহাতসহ আরও অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, তাদের অযথা অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, যদিও তারা শারীরিক পরীক্ষায় যোগ্য ছিলেন।
এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা যমুনা টিভির প্রতিনিধি দুলাল সাহাকে হামলা ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়, এবং তাঁর ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। ঝালকাঠি জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, শারীরিক পরীক্ষায় বাদ পড়া চাকরিপ্রত্যাশীরা বিক্ষোভ করেছেন, এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, ঝালকাঠি জেলা কারাগারের সুপার মো. আব্দুল্লাহ ইবনে তোফাজ্জল হোসেন খান ঘটনায় দায় এড়িয়ে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে, এবং তিনি এর সঙ্গে সম্পর্কিত নন। এছাড়া, কারাধ্যক্ষ লিপি রানি সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিক্ষোভের পর চাকরিপ্রত্যাশীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ছয়টি জেলা থেকে আসা প্রার্থীদের মধ্যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে অত্যন্ত অবিচার করা হয়েছে। ঝালকাঠির প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং অন্য জেলা থেকে আসা প্রার্থীদের ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, অনিয়মের তদন্তের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হোক এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিপ্রত্যাশীরা ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করতে প্রস্তুত। তারা দাবি করেছেন, তাদের সম্মান রক্ষায় এবং চাকরি পাওয়ার জন্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হোক।