নোয়াখালী সদরের বিএডিসি গুদামরক্ষক এবং যুবলীগ নেতা মিরাজ হোসেন শান্তকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে মাইজদীর সরকারি আবাসিক এলাকার সামনে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তাকে আটক করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং রাতে তাকে লক্ষ্মীপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মিরাজ হোসেন শান্ত লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা এবং ওই উপজেলার যুবলীগের একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি নোয়াখালীতে বিএডিসির গুদামরক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, শান্ত দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে সরকারি চাকরিতে থেকে নানা অনিয়ম করে আসছিলেন।
তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বিভিন্ন সময়ে জেলার একাধিক থানায় শান্তর ইন্ধনে সহিংসতা ও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ওঠে। একাধিক রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত থাকার কারণে তার নাম সাংবাদিক নির্যাতনের মামলাতেও উঠে আসে।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের সহায়তায় সন্দেহভাজন হিসেবে শান্তকে আটক করে থানায় আনা হয়। প্রাথমিক যাচাইয়ে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শান্তর বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে দুটি বিস্ফোরক আইনে এবং একটি সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে তার গ্রেপ্তার নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, তার প্রভাবশালী পরিচয় থাকায় এতদিন তাকে আইনের আওতায় আনা যায়নি। তবে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পুলিশের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে এখনও যুবলীগ কিংবা বিএডিসির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তাকে অন্য থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রেপ্তারের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, অপরাধী যে-ই হোক, তার রাজনৈতিক পরিচয় দেখার সুযোগ নেই—আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।