নোয়াখালীর সদর উপজেলায় জুলাই-গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ছোট ভাই শাহরিয়ার হাসান রিমন (১৬) নির্মমভাবে ছুরিকাঘাতে জখম হয়েছেন। রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় মাইজদী শহরের বালিংটন মোড়ে এই হামলা চালায় স্থানীয় ছাত্রলীগের একাংশ।
ঘটনার শিকার রিমন নোয়াখালী পৌরসভার বাসিন্দা ও হরিনারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার মা ফরিদা ইয়াসমিন জানান, গত দুই দিন আগে রিমনের স্কুলের বন্ধুদের সাথে ছাত্রলীগের একাংশের সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে রিমন শিক্ষকদের জানালে হামলাকারীরা প্রতিশোধ নেয়।
স্কুল থেকে ফেরার পথে রিমনকে লক্ষ্য করে হামলাকারীরা। তারা তাকে পিছন থেকে ডেকে এনে পিঠ ও মাথায় ৬টি ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয়রা তাকে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকায় রেফার করেন।
মা ফরিদা ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা প্রথমে ভেবেছিল রিমন মারা গেছে। যখন জানতে পারে সে বেঁচে আছে, তখন তারা হাসপাতালে গিয়ে আবার হামলা করার চেষ্টা করে। রিমনের স্কুলের বন্ধুরা হামলাকারীদের চিনে বলে তিনি জানান।
সুধারাম থানার তদন্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু তাহের বলেন, "ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা তদন্ত করছি এবং দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।" তবে তিনি ঘটনার সঠিক কারণ এখনো নির্ণয় করতে পারেননি বলে জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিমনের বড় ভাই রিজভী গত জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনে নিহত হন। সেই থেকে পরিবারটি বিভিন্ন হুমকির মধ্যে রয়েছে। এবার রিমনের ওপর হামলায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলি ঘটনাটি তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তারা বলছে, শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা উচিত।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, রিমনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তার চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুলিশ হামলাকারীদের শনাক্ত করতে বিশেষ টিম কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে।