দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার তাহেরগঞ্জ বাজার এলাকায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলায় নিহত হয়েছেন নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাজুল ইসলাম। শুক্রবার রাতে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতের বড় ছেলে এস এম শিবলী সাদিক শনিবার নবাবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত শাহাজুল ইসলাম কিছুদিন আগে স্থানীয় এক নারী দাদন ব্যবসায়ী নাজনিন আক্তারের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়েছিলেন। সেই টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে তাহেরগঞ্জ বাজারে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নাজনিনের স্বামী রনি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শাহাজুল ইসলাম এবং তার ছেলে সায়েম সাদিকের ওপর হামলা চালায়।
ঘটনার পর স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বাবা-ছেলেকে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহাজুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আহত সায়েম সাদিককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় নিরঞ্জন নামের এক দোকানে খাবার খাওয়ার সময় আসামিরা এসে পাওনা টাকা দাবি করে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে রনি মিয়া ধারালো ছোরা ও ইস্পাতের পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালান। হামলায় গুরুতর জখম হয়ে শাহাজুল ইসলাম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা রনি মিয়াকে আটক করলেও তার স্ত্রী নাজনিন ও ছেলে মেস্তাহুল পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আটক রনি মিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ইউপি সদস্য মো. সোহেল রানা জানান, বাজারে বিশৃঙ্খলা দেখে তিনি ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তা চান। দ্রুত পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল মতিন জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।