ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ আইন বাতিল ও মুসলিমদের উপর চালানো নির্যাতনের প্রতিবাদে নওগাঁয় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে দুপুর ২টার দিকে নওগাঁ কেন্দ্রীয় মডেল মসজিদ থেকে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নওজোয়ান মাঠের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা ভারতের মুসলিম নিপীড়ন, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা, এবং মুসলিমদের সম্পদ দখলের উদ্দেশ্যে প্রণীত ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে তীব্র প্রতিবাদ জানান। বক্তারা বলেন, ভারত সরকার একদিকে মুসলমানদের উপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে সীমান্তে নির্মমভাবে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে শুধু বিবৃতি নয়, প্রয়োজন সমন্বিত প্রতিরোধ।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি ও জাতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধ মঞ্চ নওগাঁর অন্যতম সমন্বয়ক খন্দকার রেজাউর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির নওগাঁ সংগঠক দেওয়ান মাহবুব আল হাসান সোহাগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁর সমন্বয়ক আরমান হোসেন, গণ অধিকার পরিষদের নেতা অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক মুফতি ইসরাফিল আলম ও আহলে হাদীস জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুস সাত্তার।
সমাবেশে বক্তারা ভারতের আগ্রাসী ও সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ইচ্ছা থাকলেও মুসলমানদের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতন ও সম্পত্তি দখলের ন্যায়বিচারবিরোধী কার্যক্রম মেনে নেওয়া যায় না। বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ভারতীয় ওয়াকফ আইন বাতিল না হলে ‘মার্চ ফর দিল্লি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনে মুসলিম হত্যার প্রতিবাদ করি, কিন্তু পাশের দেশ ভারতে মুসলিম নিধনের বিরুদ্ধে নীরব থাকি। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ভারতেই আজ নতুন এক ইসরায়েল গড়ে তোলা হচ্ছে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা দেওয়ান মাহবুব হাসান সোহাগ বলেন, “বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ভারতের বিরুদ্ধে লেখার কারণেই শহিদ হয়েছেন। ভবিষ্যতের নেতৃত্ব যারা দিতে চান, তাদের ভারতপ্রীতি ত্যাগ করতে হবে।”
খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি খন্দকার রেজাউর রহমান বলেন, “ভারত সীমান্তে পাখির মত গুলি করে আমাদের ভাইদের হত্যা করছে। এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী আচরণের বিরুদ্ধে আমাদের রাস্তায় নামতেই হবে।”
সমাবেশে অংশগ্রহণকারী তৌহিদী জনতা দাবি জানান, অবিলম্বে ভারতীয় ওয়াকফ আইন বাতিল, সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ, এবং মুসলমানদের উপর চালানো নির্যাতনের জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।