ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমী ও নজরকাড়া বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ। মুসলিম ইউনিটির উদ্যোগে এই কর্মসূচিতে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানান এবং ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ জানান। পহেলা বৈশাখের বিকেলে অনুষ্ঠিত এই মিছিলটি কমলগঞ্জ উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয় ভানুগাছ চৌমুহনা চত্বরে এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশে।
বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে মুসল্লিরা ‘সেইভ গাজা-সেইভ ফিলিস্তিন’, ‘ইসরায়েল বয়কট’, ‘ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর দুই গালে জুতা মারো’, ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ইসলামের শত্রুরা হুঁশিয়ার সাবধান’ সহ বিভিন্ন স্লোগানে কমলগঞ্জ শহরকে প্রকম্পিত করে তোলে। তারা হাতে ছিল নানা প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড, ব্যানার এবং ফিলিস্তিনি পতাকা।
সমাবেশের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ হিফজুর রহমান ফাহাদ। সঞ্চালনায় ছিলেন মোঃ মোহিন মিয়া ও তারেকুল ইসলাম পাটোয়ারী। এতে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিস, জামায়াত, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত শিশু, নারী, বৃদ্ধসহ নিরীহ মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিশ্ব নেতারা নিরব দর্শকের ভূমিকায়।
বক্তারা আরও বলেন, ফিলিস্তিনে গণহত্যা দেখে যেসব দেশ নিশ্চুপ, তাদেরকেও বয়কট করা উচিত। মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারা। বাংলাদেশ সরকারকেও অনতিবিলম্বে স্পষ্টভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেয়ার দাবি তোলেন তারা।
সমাবেশে ইসরায়েলের সকল পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কটের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশ ও মিছিলে অংশ নেন খেলাফত মজলিসের মাওলানা জয়নাল আবেদীন, মাওলানা হোসাইন আহমদ খালেদ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র আন্দোলন ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা সবাই একক কণ্ঠে বলেন, ফিলিস্তিন আমাদের হৃদয়ের অংশ, তাদের রক্ষায় আমরা সবসময় প্রস্তুত।
বিক্ষোভ শেষে অনুষ্ঠিত হয় মোনাজাত, যা পরিচালনা করেন ক্বারী মাওলানা আবুল বাশার। সেখানে হাজারো মানুষের চোখে জল ছিল ফিলিস্তিনের শহীদদের স্মরণে। মোনাজাতে দোয়া করা হয় মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য এবং ইসরায়েলের ধ্বংস কামনায়।