সরাইলে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত জসিমের মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে জসিম (৩৮) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত জসিম তেরকান্দা গ্রামের চান্দের গ্রুপের মুসলিম মিয়ার ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গ্রামে সিএনজি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। খালের দক্ষিণ পাড়ার চান্দের গ্রুপের আক্কাছ মিয়ার লোকদের একটি সিএনজি চুরি হওয়ার পর স্থানীয় বারিক গ্রুপের আমির আলীর লোকজনকে চুরির জন্য দায়ী করা হয়। এই অপবাদকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

প্রথম দফার সংঘর্ষ হয় সোমবার (৭ এপ্রিল) রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। এরপর পরদিন মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ৫টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় দফার সংঘর্ষ। দফায় দফায় চলা এই সহিংসতায় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, বসতঘরে ভাংচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে অনেককে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত জসিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জসিমের মৃত্যুর খবরে এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকাজুড়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল হাসান জানান, নিহত জসিমের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে। এলাকাজুড়ে পুলিশি টহল অব্যাহত আছে এবং পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই চান্দের গ্রুপ ও বারিক গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সামান্য ঘটনায় তা আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়, যার মাশুল দিতে হলো জসিমকে। এলাকার সচেতন মহল শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বান জানিয়েছে।