ঈদকে সামনে রেখে ঢাকাসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে বাড়ি ফিরছেন লাখো মানুষ। বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত সময়ে, সড়কে যানজটের শঙ্কা থাকলেও এবার সিরাজগঞ্জে তা পরিহার করতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফেরার পথে যাত্রীদের স্বস্তির যাত্রা নিশ্চিত করতে মহাসড়কে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
২৯ মার্চ, শনিবার সকাল থেকেই সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ির চাপ লক্ষ্য করা গেছে। কড্ডার মোড়, মুলিবাড়ি চেকপোস্ট, নলকা, এবং হাটিকুমরুল গোলচত্ত্বরে যানবাহনের গতি ছিল স্বাভাবিক। তবে, বেলা ১২টা পর্যন্ত মহাসড়কগুলোতে কোনও বড় ধরনের যানজট দেখা যায়নি। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তৎপর ছিলেন।
এবারের ঈদযাত্রায় মহাসড়কের যানবাহন চলাচল আরও সহজ করতে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ১১টি উড়াল সেতুর মধ্যে ৯টি চালু করা হয়েছে। এছাড়া হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের সার্ভিস সড়কও খুলে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে যানবাহন দ্রুত চলাচল করতে পারছে। এই পদক্ষেপগুলি উত্তরের ঈদযাত্রাকে অনেকটা স্বস্তিদায়ক করেছে।
দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক যমুনা সেতু পশ্চিম সড়ক। প্রতি ঈদে এখানে যানবাহনের চাপ থাকে অনেক বেশি। তবে এবারে সড়কটির ৪৫ কিলোমিটার এলাকা নিরাপদ রাখতে প্রায় ১ হাজার ৭ শতাধিক পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। এই পুলিশ সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এছাড়া সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব এবং পুলিশ বাহিনীর গোয়েন্দা শাখাও বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে।
এ বছর ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা, ডাকাতি বা ছিনতাইয়ের ঝুঁকি কমাতে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্পটে ৪৫টি মোবাইল টিম ও ৫৬টি পিকেট টিম নিয়োগ করা হয়েছে। যান চলাচল মনিটর করতে ড্রোন ক্যামেরারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত উদ্ধার কাজ করার জন্য রেকারও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, ঈদের সময় মহাসড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। তারা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে এবং বিশেষভাবে ব্ল্যাক স্পটগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের সুপার শহিদ উল্লাহ বলেন, এই ঈদযাত্রায় সিরাজগঞ্জের মহাসড়কগুলোতে যানজটের আশঙ্কা নেই। উড়াল সেতু এবং সার্ভিস সড়ক খুলে দেওয়ার ফলে যান চলাচল অনেকটা সহজ হয়েছে। এবারের ঈদযাত্রা উত্তরাঞ্চলে স্বাভাবিক ও সুন্দর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এছাড়া, সাসেক-২ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান জানান, এবারের ঈদযাত্রা সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত হবে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, যমুনা সেতুর পশ্চিম পাশ থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত চার লেন ব্যবস্থার কারণে যানবাহন চলাচল আরও স্বস্তিদায়ক হবে।
ঈদযাত্রা সাধারণত একটি কঠিন সময় হলেও এবার সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে নেওয়া পদক্ষেপগুলির কারণে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়কভাবে বাড়ি ফিরতে পারবেন।