প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১:২১
রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের পক্ষে-বিপক্ষের ইস্যু নিয়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। রোববার কলেজ প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বহিরাগতরা অনুপ্রবেশ করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে । এতে কয়েকজন ছাত্রী লাঞ্ছিত হয়েছে।
জানা গেছে, সব ধরণের রাজনীতি শিক্ষাঙ্গন থেকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রোববার সকালে রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজে মানববন্ধন এবং মিছিল হওয়ার কথা ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু কর্মসূচি করার আগেই সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে একদল বহিরাগত কলেজে প্রবেশ করে।
তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা কলেজের মধ্যে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে রাজনৈতিক আলোচনা সভা করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাঁধা দেয়। একপর্যায় দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিত- হয় এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এনিয়ে প্রায় এক-দেড়ঘন্টা অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
নিরাপত্তা জনিত কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন কর্মসূচির পক্ষের রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ক্লাস করতেছিলাম। এমন সময় বহিরাগত আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ জন ছেলেপেলে কলেজে আসে। তারা নাকি স্যারদের সঙ্গে কথা বলবে। কিন্তু আমরা বলছিÑবহিরাগত কোন লোক কলেজে প্রবেশের অনুমতি নেই, এটা সবাই জানে। তবুও তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে এসে কথা বলতে বলেছি।
কিন্তু তারা এটা না শুনে এক মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে জোরপূর্বক কলেজের ভবনে ঢুকে পড়ে। আরও কয়েকজন ছাত্রীর ওপর চড়াও হয়। ধাক্কাধাক্কি করে এবং ছাত্রীদের গায়ে হাতও তোলে। এক ছাত্রী পুলিশকে ফোন দেওয়ার জন্য মোবাইল বের করেছিল, তার ফোনটা টেনে নিয়ে গেছে। আমাদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। পরে আমরা ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ার পর পুলিশ আসে।’
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘আমরা চাই রাজনীতিমুক্ত কলেজ। যেখানে কোন দলের রাজনীতি থাকবে না। কিন্তু তারা চায় রাজনীতি করতে। একারণেই তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে গিয়ে এই কাজ করেছে। তাদের কারণে আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করতে পারিনি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আলোচনা সভা যারা করতে এসেছিলÑশিক্ষার্থীরা তাদের বাঁধা না দিলে হয়তো কোন ঝামেলা হতো না। তবে কে বা কারা এই বহিরাগতÑতাদের পরিচয় জানা যায়নি। তাই তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু ছেলেরা এসে একটা মিটিং করতে চেয়েছিল। কিন্তু সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা বলছে কলেজে আমরা ছাত্র রাজনীতি করতে দিবো না। এনিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তখন আমি কলেজে ছিলাম না। পরে এসে সবাইকে নিয়ে হলরুমে বসে মীমাংসা করে দিয়েছি।’
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পোলাপানের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়েছিল। পরে শিক্ষকরা বসে বিষয়টি সমাধাণ করেছে। কোন হাতাহাতি-মারামারি এ ধরণের কিছু ঘটেনি।’