প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ৩:১৮
আজ সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল হতে দুপুর একটা পর্যন্ত সরাইল উপজেলা পরিষদের নতুন কমপ্লেক্সে উপজেলা মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভা চলছিল। হঠাৎ বাহিরে লোকজনের গন্ডগোলের আওয়াজ শোনে।সভা স্তল থেকে সবাই বাহিরে চলে যায়। বাইরে গিয়ে জানা যায়,অরুয়াইল ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইঁয়া'র লোকজন ও অরুয়াইল ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.কুতুব উদ্দিন ভূইঁয়া'র ছেলে সোহের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সরাইল উপজেলা অরুয়াইলের জমির খারিজকে কেন্দ্র করে বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মো. সোহেল ভূইঁয়া আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার দুপুর একটার দিকে উপজেলা চত্বরেএ ঘটনা ঘটে। উপজেলার অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেনও সাবেক অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম কুতুব মিয়ার ছেলের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জায়গা সম্পত্তি কেন্দ্র করে এই দুজনের দ্বন্দ্ব পুরোনো। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাবেক অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম কুতুব উদ্দিন ভূইঁয়া'র ছেলে আহত মো. সোহেল ভূইঁয়া স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আহত মো. সোহেল ভূইঁয়া বলেন, আমার বাবা থাকতে একটি জায়গা আমার নামেও মোশাররফ চেয়ারম্যান এর নামে দলিল করা হয়েছিল। সেই সুবাদে জমির মালিক আমি ও মোশাররফ চেয়ারম্যান। কিন্তু কিছুদিন হয় মোশাররফ চেয়ারম্যান এর নামে ১৭ শতক জায়গা খারিজ করে নেই।এমন কথা আমি জানতে পারলে।সরাইল উপজেলা ভূমি অফিসে এসিল্যান্ড স্যারের বরাবর একটি অভিযোগ করি। এসিল্যান্ড স্যার অভিযোগটি আমলে নিয়ে আজকে আমাদের শুনানির তারিখ ছিল। এসিল্যান্ড স্যার আমাদের শুনানি শেষে। অফিস থেকে বের হতেই আমাকে মোশাররফ চেয়ারম্যান সহ চার-পাঁচজন আক্রমণ করে। এর পরে আমি মাটিতে পড়ে যায়। আমাকে এডভোকেট শফিকুর রহমান এসে আমাকে উপজেলা চত্বরে নিয়ে যাই। সেখানে আইনশৃঙ্খলা সভায় ইউএনও স্যার ওসি সাহেব ছিল আমি উনাদেরকে সব জানিয়েছি।এ ব্যাপারে অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইঁয়া, আইন -শৃঙ্খলা সভা কে জানান।উপজেলা চত্বরে এসে এখন যে ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে এড. মো. শফিকুর রহমান বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া কোর্টে ছিলাম। সোহেল সকালে ফোন দিয়ে বলছে।ভাই একটু আসেন আমার জায়গাটা নিয়ে মোশাররফ চেয়ারম্যানের সাথে আজকে এসিল্যান্ড অফিসে শুনানি আছে। এড. মো. শফিকুর রহমান বলেন, কোর্ট থেকে আসতে আমার দেরি হয়েছে আমি অফিসের বারিন্দায় এসে দেখি সোহেল মাটিতে পড়ে রয়েছে। আমি বললাম কি হয়েছে।সোহেল বলেন মোশাররফ চেয়ারম্যান সহআমাকে এরা চার-পাঁচজন মেরেছে। এসময় সরাইল উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা সভা চলছিল।আমি সেখানে সোহেলকে নিয়ে যাই। সোহেলের বিষয়টি আমি আইনশৃঙ্খলা যারা ছিল তাদেরকে বলেছি। বাহির হতে মোশাররফ চেয়ারম্যানসহ তার সঙ্গরা আমার উপরে টেড়ে আসে। পরে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং এখানে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ আনে।
উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবাল হোসেন বলেন, সরাইলের জন্য দুঃখ জনক, কলঙ্ক ও নেক্কারজন ঘটনা ঘটেছে ।আমরা কোনদিনও তাদের কাছ থেকে এ আশা করতে পারি না। এ ঘটনা তীব্র নিন্দা জানাই। একদিকে আইন-শৃঙ্খলা সভা চলছে আর বাহিরে তারা হট্টগো গন্ডগোল করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। যারা এরসাথে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতা আনার দাবি জানাচ্ছি।
উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহফুজ আলী বলেন, আইনশৃঙ্খলা সভা চলাকালীন অরুয়াইলের দুই পক্ষের তারা।আজকে যে ঘটনাটা উপজেলা চত্বরে ঘটেছে এটা খুবই দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। আমি এ ঘটনার নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, 'পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে তুচ্ছ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। এ পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেইনি।অভিযোগ পেলে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও)ও উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভার সভাপতি মো. মেজবা উল আলম ভূইঁয়া বলেন, আইন-শৃঙ্খলা সভা চলাকালীন বাহিরে গন্ডগোল শুনতে পাই। বাহিরে জমায়েত লোকজনকে যেতে বলি তারা সঙ্গে সঙ্গে চলে যায়। এই ঘটনা জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিক উদ্দিন ঠাকুর আইন-শৃঙ্খলা সভায় তিনি তাঁর বক্তব্য এ বিষয়ে বলেন, অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান (মোশাররফ হোসেন) চেয়ারম্যান হিসেবে মিটিং থেকে যাওয়াটাই ঠিক হয়নি। নয়জন চেয়ারম্যানদের মধ্যে মোশাররফ চেয়ারম্যান কে আমি একটু বুদ্ধিমান মনে করতাম। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আক্ষেপ করে বলেন, আমার একটা দুঃখ থাকবে ১০ বছর চেয়ারম্যানী করেছি। আইন-শৃঙ্খলা সভায় বেশী সময় শুধু আলোচনা করতে হয় অরুয়াইলকে নিয়ে। অরুয়াইলে আসলে কি আছে জানতে চাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর।তিনি বলেন, আজ এখানে যারা আসছিল তাদেরকেও আমরা জানি! তোমাদেরকেও চিনী। এই ধরনের কাজ নিন্দনীয়।