প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১:১৬
কুয়াকাটায় তৃতীয় দিনের মত চলছে সরকারী জমি উদ্ধার অভিযান। রবিবার সকালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে এই উচ্ছেদ অভিযান। প্রথম পর্যায়ে বেড়িবাধেঁর উপরের থাকা ৩ শতাধিক দোকানপাট ও জেলে বাসা ভেঙ্গে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। দ্বিতীয় দিন থেকে সরকারী জমি উদ্ধারে নামে জেলা প্রশাসন।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার সমুদ্র সৈকত এলাকায় বসবাসরত চার শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদে নামে জেলা প্রশাসন। বিকেল পর্যন্ত তিন শতাধিক বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়। পর্যায়ে ক্রমে বেড়িবাধেঁর বাইরে থাকা সকল স্থাপণা ভেঙ্গে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। বেড়ীবাধেঁর বাইরে বসবাসরত বাসিন্দারা এখন উচ্ছেদ আতংকে রয়েছে।
কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পুর্বদিকে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনার মালিকরা শনিবার উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়। এসময় তারা পুর্ণবাসন করে তারপরে উচ্ছেদের দাবী জানান। কিন্ত জেলা প্রশাসন সরকারী জমি উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষনায় অনেকেই নিজে থেকে বসত ঘর সরিয়ে নিতে শুরু করে। এদের মধ্যে অনেকেই সরিয়ে নিতে পারলেও কেউ কেউ ব্যর্থ হয়। কুয়াকাটা বেড়িবাধেঁর বাহিরে বসবাসরতদের মধ্যে ৩০ ভাগ মানুষ রয়েছে বাস্তুহারা। এদের কোথাও কোন থাকার স্থান নেই। তাই মালামাল নিয়ে খোলা আকাশের নিচে স্থান নিয়েছে। যদিও জেলা প্রশাসনের পক্ষ্য থেকে জানানো হয়েছে প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর ও জমি দেয়া হবে। কবে নাগাত ঘর ও জমি দেওয়া হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। এতোদিন পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় থাকবেন এমন শংকায় রয়েছে অনেকেই।
সৈকতের বেলাভূমে এক ধরনের ঝুপড়িসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা তুলে জেলেসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ৫০-৬০ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। এসব দরিদ্র পরিবারের দাবি তাদের আগে থেকে কোন ধরনের নোটিশ দেয়া হয় নি।
কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে সরকারের রয়েছে উন্নয়ন মহা পরিকল্পনা। যা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেড়িবাঁধ আধুনিকায়নসহ উচ্চতা বৃদ্ধি এবং সৈকত এলাকার সৌন্দর্য বর্ধনে এসব স্থাপনা অপসারণ করা জরুরি হয়ে পরেছে বলে জানান জেলা প্রশাসন।
বেড়িবাধেঁর বাইরে বসবাসরত মোঃ সোহরাফ, আঃ ছত্তার, আবজাল, রত্তন. আনোরা, মজিদসহ একাধিক বাসিন্দারা জানান, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার পর তারা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকে সরিয়ে দিলে তারা কোথায় গিয়ে থাকবেন জানেন না।
এরা আক্ষেপ করে বলেন, আমরাও সরকারের প্রজা। আমাদের জায়গা জমি নেই তাই সাগরপাড়ে সরকারী জমিতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে থেকে সমুদ্রে মাছধরে, সৈকতে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও দিন মজুর কাজ করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করছিল। এখন তাদের সব কিছুই শেষ হয়ে গেছে। অনেকেই জানান, এই জমির মালিক দাবীদার শাহিন মিয়াজি গংদের কাছ থেকে প্রকার ভেদে ৪০-৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে এখানে বসবাস করেছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, বেরীবাধেঁর বাইরের জমি যে কোন মুল্য সরকার উদ্ধার করে অবৈধ দখল মুক্ত করবে। পর্যটন সম্প্রসারণে এসব জমি উদ্ধারে নেমেছে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে। উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ইউএনও।