প্রকাশ: ১ অক্টোবর ২০২২, ২৩:৩৭
আজ মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গোৎসবের। সে কারণেই দিনাজপুররের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে হঠাৎ করে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপারে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। দু দেশের ইমিগ্রেশনে তিল পরিমান দাড়িঁয়ে থাকার জায়গা নেই যাত্রীদের। ঘন্টার পর ঘন্টা ইমিগ্রেশনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এবার সনাতন ধর্মাম্বলী লোকজনের সংখ্যাই বেশি। শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হওয়ায় এই রুট দিয়ে যাত্রী পারাপার বেড়েছে। যাত্রী পারাপার আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্টরা। যাত্রীদের পাসপোর্ট ছাড় করতে হিমসিম খাচ্ছে ইমিগ্রেশন ও কাষ্টমস কতৃপক্ষ।
শনিবার (১ অক্টোবর) হিলি ইমিগ্রেশন গিয়ে দেখা গেছে, বহুদিন পরে প্রিয়জন বা আপনজনের সাথে এবার পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে এই আনন্দর ছাপ সবার চোখে মুখে ফোটে উঠেছে। তাই ইমিগ্রেশনে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকা কোন কষ্ট নয় তাদের কাছে। আজ মহাষষ্টীর মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে মুল আনুষ্ঠানিকতা। আর আগামী ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বির্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দূর্গোৎসব। সনাতন ধর্মাম্বলীদের মতে, এবার দূর্গা আসবেন হাতিতে চড়ে আর বিদায় নিবেন নৌকায় চড়ে।
হিলি ইমিগ্রেশনে কথা হয় ভারত থেকে দেশে আসা পাসপোর্ট যাত্রী জয়ন্ত চক্রবর্তীর সাথে তিনি জানান, আমি খুবই আনন্দিত। বাংলাদেশে প্রথম স্বপরিবারে আসলাম। যাবো নাটোরে পিসির বাড়িতে বেড়াতে। এবারে পূজার আনন্দটা বাংলাদেশে আপনজনের সাথে ভাগাভাগি করবো ভাবতেই অবাক লাগছে। তাই আসার সময় ইমিগ্রেশনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা কোন কষ্টই মনে হয়নি। শুনেছি বাংলাদেশে খুব ভালো উৎসব হয় তাই পিসা-পিসিদের নিমন্ত্রনে পুজো উৎসব পালন করার জন্য এসেছি।
তিনি আরও জানান, আমার মতো অনেকেই এবার বাংলাদেশে আত্বিয়দের সাথে পুজো উৎসব পালন করার জন্য আসছেন।
এসময় কথা হয় বাংলাদেশ থেকে ভারতে গমন ইচ্ছুক পাসপোর্ট যাত্রী রেখা রানীর সাথে, তিনি জানান, কাকার বাড়িতে এবার পুজার আমন্ত্রন পেয়ে দাদা (কর্তা) ও মাকে সাথে নিয়ে এই প্রথম ভারতের বালুঘাটে যাচ্ছি। আমি ভিষণ খুশি। এবার ভারতের বিভিন্ন পুর্জা মন্ডব ঘুরে ঘুরে দেখবো ও পূজার আনন্দ উপভোগ করবো। কারণ আমি শুনেছি ভারতে দেবি দূর্গার প্রতিমা অনেক সুন্দর করে তৈরি করা হয় এবং সেখানকার আলোকসজ্জা দেখার মতো। তাই এবারে পূজায় একটা আলাদা আনন্দ উপভোগ করবো।
এদিকে দূর্গাপুজাকে কেন্দ্র করে হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বেড়েছে দু’দেশে যাত্রী পারাপার। করোনা মহামারীর কারণে গেলো দুই বছর আসা-যাওয়া করতে না পারায় এবার আর সুযোগটা হাত ছাড়া করতে চান না তারা। পুজোয় আনন্দের পাশাপাশি দেখা-সাক্ষাত হবে স্বজনদের সাথে এমনটাই বলছেন যাতায়াতকারী পাসপোর্ট যাত্রীরা। এছাড়া অনেকে যাাচ্ছেন, চিকিৎসা, ভ্রমনসহ ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে। তবে শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। তাছাড়া ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছেন পুজোর পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করতে অনেক যাত্রী।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এর ওসি মো; বদিউজ্জামান জানান, সনাতন ধর্মাম্বলীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপুজা উপলক্ষে হিলি চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে। গেলো সপ্তাহে এই রুট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪শ জন যাতায়াত করলেও এখন সেই সংখ্যা প্রায় ৮০০ শতে দাঁড়িয়েছে। পূজার কয়েক দিনের মধ্যে যাত্রী পারাপার আরো বাড়তে পারে বলে আশা করছি।