করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়া ১৯তম মরদেহ গোসল, জানাজা ও দাফন করল ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার শাবাব ফাউন্ডেশন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) ঝালকাঠি সদর উপজেলার ১০ নং নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের চাচৈর গ্রামে করোনায় মৃত্যু হওয়া আফিয়া বেগম (৬৫) নামের এক নারীকে গোসল করিয়েছে ফাউন্ডেশনের মহিলা ইউনিট।
মৃত আফিয়া বেগম চাচৈর গ্রামের সৈয়দ আবদুল মালেকের স্ত্রী। তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) করোনা ইউনিটে ভর্তি ছিলেন বলে জানায় পরিবার।
শাবাব ফাউন্ডেশন জানায়, মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসার পর এলাকার লোকজন জানাজায় অংশগ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করলে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার এই শাবাব ফাউন্ডেশনের কাছে সহযোগিতা চায় মৃতের পরিবার। এরপর মুফতি জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে পরিচালিত শাবাব ফাউন্ডেশনের মহিলা ইউনিট সেখানে উপস্থিত হয়ে মৃতের গোসল সম্পন্ন করায়।
নারী সদস্যরা হলেন নাজমা বেগম, শেফালি বেগম ও রানি বেগম। জোহরের নামাজের পরে জানাজা শেষে মৃতকে দাফন করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শাবাব ফাউন্ডেশনের মুফতি হানযালা নোমানি, হাসিবুল হাসান সবুজ, শাহাদাত ফকির, কামাল, আ. রহমান ও জামাল।
উল্লেখ্য, গত বছর করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণের পর যখন সন্তানরা পর্যন্ত বাবা-মায়ের লাশ দাফনে অনীহা প্রকাশ করেন, তখন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় দুজন মুফতির সমন্বয়ে এলাকার ধর্মপ্রাণ কিছু যুবক মিলে করোনায় মৃতদের গোসল করানোর সিদ্ধান্ত নেন। যুবক শব্দের আররি নাম হলো শাবাব। সে অনুযায়ী সংগঠনের নামকরণ হয় শাবাব ফাউন্ডেশন।
সংগঠনের সদস্য শাহাদাত ফকির ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি আমাদের ১৯তম দাফন হলেও ঝালকাঠি সদরে এই প্রথম কাউকে আমরা গোসল করালাম। যেখানেই কেউ বিপদে পড়বে, আমরা সাধ্য অনুযায়ী তার পাশে দাঁড়াব।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুম্পা সিকদার বলেন, আজকের ঘটনাটি যদিও ঝালকাঠি সদর উপজেলার। তবে শাবাব ফাউন্ডেশন নলছিটিতে গত বছর থেকে করোনায় মৃতদের গোসল ও দাফনের মতো মানবিক কাজটি নিয়মিত করে যাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সংগঠনকে আমরা পিপি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম।