প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২১, ২০:৪৯
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের ১০ দিন রাজধানীতে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি না রাখতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
পূর্ব ঘোষিত কোনো কর্মসূচি থাকলে সেগুলোও প্রত্যাহারের অনুরোধ এসেছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি ওই সময় পর্যন্ত দেশের 'সুনাম' ক্ষুণ্ণ হয়-এমন কর্মসূচি দিলে তা শক্ত হাতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও সর্তক করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার (এসবির প্রধান হিসেবে বদলীকৃত) মো. মনিরুল ইসলাম নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। ডিএমপি সদরদপ্তরে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় নানা কর্মসূচি থাকবে। এসব কর্মসূচিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ সার্কভুক্ত পাঁচটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা মহানগরে চলমান নানা উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য নগরবাসীর সমস্যার কথা তুলে ধরে মনিরুল ইসলাম বলেন, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী অনুষ্ঠান হচ্ছে। এতে নানা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান অংশ নেবেন। ওই দুটি অনুষ্ঠানের কারণে ট্রাফিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে বলে জনদুর্ভোগ এড়াতে ১০ দিন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে কর্মসূচি না রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। কোনো কর্মসূচি দেওয়া থাকলে তা প্রত্যাহার করারও অনুরোধ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ওই সময়টায় ভিভিআইপি অতিথিরা নানা কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। এতে নিয়মিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন ঘটতে পারে। ট্রাফিক ঝামেলা এড়াতে ওই সময়ে নগরবাসী যারা ঘরের বাইরে কোথাও যাবেন, সেক্ষেত্রে কিছুটা সময় নিয়ে বের হতে হবে। তবে ট্রাফিক দুর্ভোগ কমাতে পুলিশের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার বলেন, 'নিরাপত্তা বিষয়ে কম্প্রোমাইজ করার কোনো সুযোগ নেই। অতিথিরা যে সমস্ত অনুষ্ঠানে যাবেন এবং যেখানে অবস্থান করবেন, সেসব জায়গায় ভিভিআইপি নিরাপত্তার যে প্রটোকল আছে, সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিরোধিতা করে কতিপয় সংগঠনের কর্মসূচির বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, 'যারা ইতোমধ্যে এই ধরনের ঘোষণা করেছেন, আমরা আশাবাদী তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তারা নিজেরাই এই ধরনের দেশবিরোধী বা বিদেশি অতিথিদের কাছে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়, এমন কর্মসূচি থেকে সবাই বিরত থাকবেন। তারপরও তারা যদি না থাকেন, নাশকতা করার চেষ্টা করে, তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে শক্ত হাতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কর্মসূচি পালনের অধিকারকে 'দেশবিরোধী' বলার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপির এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, 'স্বাধীনতা সকলের, দেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা, আমাদের সাংবিধানিক বিষয়। কাজেই এর সঙ্গে সংবিধান জড়িত, দেশের সুনাম জড়িত; এ কারণে সরকারবিরোধী না বলে এই ধরনের কর্মসূচিতে দেশবিরোধী বলা হয়েছে।'
এদিকে ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলায় সড়ক সংকুচিত হওয়ায় ভিভিআইপিদের যাতায়াতের রাস্তায় যান চলাচলে চাপের সৃষ্টি হতে পারে। এতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সাময়িক সমস্যা ঘটতে পারে।
এসব বিষয় বিবেচনায় নগরবাসীকে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যাতায়াতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হতে হবে। যানবাহন চলাচলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সম্ভাব্য অসুবিধার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখও প্রকাশ করা হয় ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।