যেমন আছেন পানের গ্রামের পানচাষীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: শুক্রবার ২১শে জানুয়ারী ২০২২ ০৪:৪০ অপরাহ্ন
যেমন আছেন পানের গ্রামের পানচাষীরা

আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথলী গ্রামের   ১৫০ পরিবারই পানের চাষ করে। শত বছর ধরে এ গ্রামে পান চাষ হয়ে আসছে। পান চাষই এ গ্রামের অধিকাংশ পরিবারগুলোর উপার্জনের প্রধান উপায়। 


উপজেলা সদর থেকে পাঁচ/ছয় কিলোমিটার দক্ষিনে পাইথলী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামটির অধিকাংশ এলাকায় পানের বরজ। কৃষকরা পানের বরজের পরিচর্যা করছেন, বরজ থেকে পান সংগ্রহ করে বাড়ির উঠানে এনে স্তূপ করে রাখছেন। সেখানে পরিবারের সদস্যরা মিলে পান বাছাই করে আলাদা করে রাখছেন। 


গ্রামের পান চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রামটিতে বর্তমানে ১২০/২০০ টি পানের বরজ রয়েছে। গ্রামের প্রায় ১০০/১৫০টি পরিবার পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে এ উপজেলায় গত বছর প্রায় তিন থেকে পান  হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথলী, বৈউলা, গ্রাম সহ ১৫-১৬টি গ্রামে পানের চাষ হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা বরজে এসে পান কিনে নিয়ে যান। 


স্থানীয় বাজারে বড় আকারের  ৮০টি পান বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৮০ টাকা। মধ্যম আকারের ৮০ টি পান ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর ছোট আকারের ৮০ টি পান  ২০ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হয়।পাইথলী গ্রামের পান চাষি চিরঞ্জিত রাহা কুমার বলেন, আমার বাবা ৪০-৪৫ বছর আগে পান চাষ শুরু করেন। এখন আমি পান চাষ করছি। বর্তমানে এক বিঘা জমির ওপর আমার তিনটি পানের বরজ রয়েছে। এ বছর তিনটি বরজে  খরচ হয়েছে প্রায় প্রায় ৩ লাখ টাকা। পান বিক্রি হয়েছে সমপর্যায়ে। 


২০১৯ সালে করোনা দেখা দেওয়ার পর পান চাষ করে লাভবান হওয়া তো দুরের কথা নিজেদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। গোবিন্দ কর বলেন পান চাষের টাকায় আমার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ও সংসারের যাবতীয় খরচ চলে।পানের বাজার মন্দা থাকায় সংসার পাতিপালন করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 


আরেক পান চাষি সজল রাহা বলেন, পানের বরজ থেকে সারা বছরই পান সংগ্রহ করা যায়। তবে শীতকালে তুলনামূলক কম পান উৎপাদন হয়। কারণ শীতকালে পান পাতা বাড়ে কম। তবে উৎপাদন কম হলেও এ সময় বাজারে পানের দাম থাকে বেশি।তবে করোনার কারনে এ বছর পানের মূল্য পায় নি।


 বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মাহাবুবুল হক ডাবলু বলেন এ ইউনিয়নের বৈউলা ও পাইথলী গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার পান চাষ করে। বরজ রয়েছে কয়েক শতাধিক।  বরজগুলোতে পানের ফলন হয়েছে ভালো,কিন্তু করোনার কারনে পানের মূল্য বৃদ্ধি না পাওয়ায় এখানকার পান চাষীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।।  


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান বলেন, আশাশুনি উপজেলায় দিন দিন পান চাষ বাড়ছে। অন্যান্য ফসল আবাদের তুলনায় পান চাষ লাভজনক। তাই কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করে থাকি। পানের ফলন ভালো করার জন্য আমাদের মাঠ কর্মীরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সহযোগিতা করে থাকেন।