চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে সম্প্রতি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর সংক্রমণ বেড়েছে, যার কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে, যার ফলে দেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থা চাপের মধ্যে পড়েছে। অনেকেই এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে তুলনা করছেন।
চীনে এ ভাইরাসটি শীতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে, কারণ শীতকালীন সময়ে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ অনেক বেশি হয়। সুতরাং, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে এই ভাইরাসটি কোভিডের মতো মহামারি আকারে ছড়াতে পারে। তবে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোগটি কম গুরুতর এবং আগের বছরের তুলনায় ছোট আকারে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে।
এইচএমপিভি সম্পর্কে চীনের পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিবেশী দেশও সতর্ক রয়েছে। হংকং, কম্বোডিয়া, এবং তাইওয়ানেও ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটেছে এবং এসব দেশে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষত, শিশু, বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তিরা এই ভাইরাসের প্রতি বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এদিকে, ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই ভাইরাসকে খুব বেশি আতঙ্কের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেনি, বরং এটি অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের মতোই হতে পারে বলে জানিয়েছে। ভারতের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ভাইরাসটি সাধারণ সর্দি এবং ফ্লু জাতীয় উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে।
এইচএমপিভি (হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস) ২০০১ সালে প্রথম চিহ্নিত করা হয় এবং এটি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। এর উপসর্গগুলোর মধ্যে কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ হওয়া এবং শ্বাসকষ্ট উল্লেখযোগ্য। গুরুতর ক্ষেত্রে, ভাইরাসটি ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়াসহ আরো গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এর দ্রুত সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কাজ করছে। এই ভাইরাসটি হাতের স্পর্শ, কাশি বা হাঁচি থেকে ছড়ায়, তাই বিশেষজ্ঞরা সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে।
এদিকে, চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, বিদেশিদের জন্য চীন ভ্রমণ এখনো নিরাপদ, এবং সরকারের পক্ষ থেকে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।