জামালপুরের মাদারগঞ্জে ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতার চাঁদা দাবির একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৩৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্প থেকে ১০ শতাংশ চাঁদা দাবির কথা শোনা যায় অডিওতে। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের মাঝে। চাঁদা দাবির বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছে দলীয় নেতাকর্মীরা।
সোমবার (০৩ মার্চ) কথোপকথনের ৭ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের অডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। ঠিক কবে থেকে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করা হয়েছে তা জানা যায়নি।
চাঁদা দাবি করা সেই বিএনপি নেতা শফিউল ইসলাম স্বপন মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছে।
অডিওতে শোনা যায়- একটি প্রকল্পের প্রকৌশলীর সাথে কথা বলছেন স্বপনসহ বেশ কয়েকজন। তারা ওই প্রকৌশলীকে প্রকল্পের ৩৭ লাখ টাকা থেকে ১০ শতাংশ চাঁদা হিসেবে দাবি করেন। ওই প্রকৌশলী প্রথমে অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে চান। এরপর কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে টাকা দিতে রাজি হন সেই প্রকৌশলী। টাকা দেয়ার পর প্রকল্পের কাজ যেনো তেনো ভাবে শেষ করলেও অসুবিধা নেয় বলে জানান বিএনপি নেতা শফিউল ইসলাম স্বপন। এছাড়াও অডিওটিতে ফরহাদ হোসেন লিটন নামে স্থানীয় এক যুবদল নেতাকেও চাঁদা চাইতে শোনা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চরপাকেরদহ ইউনিয়ন বিএনপির একজন নেতা বলেন-‘৫ আগস্টের পরে আমরা সবাই যখন দল সুসংগঠিত করতে, দলের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছি। ঠিক সেই সময়ে এমন অডিও ফাস হওয়া খুবই দুঃখজনক বিষয়। আমরা চাই যে, দল বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করুক। যাতে আমাদের দলের ক্ষতি না হয়। শফিউল ইসলাম স্বপন যদি দোষী হয় তাহলে কার বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা গ্রহন করুক। আর তিনি যদি দোষী না হয়। তাহলে এই অডিও’র পেছনে যারা রয়েছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনুক।’
প্রকল্পটির প্রকৌশলী আবু রায়হান আবির মোবাইল ফোনে জানান- ‘এলজিইডির প্রভাতী প্রকল্পের আওতায় তেঘরিয়া বাজারে নির্মান কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এই কথোপকথন কবে হয়েছে আমার মনে নেই। মনে হচ্ছে বিষয়টি এআই দিয়ে করা। আমিও রেকর্ডটি খতিয়ে দেখছি।’
চাঁদা দাবির বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা শফিউল ইসলাম স্বপন বলেন-‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার আওয়ামী লীগসহ একটি পক্ষ সুপার এডিট করে এই অডিও ভাইরাল করছে। আমি এই ঘটনায় ইতিমধ্যে মাদারগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছি। আমি চাই, যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই কাজ করেছে, তাদের বিচার হোক।’
এসব বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট মঞ্জুরুল কাদের বাবুল মোবাইল ফোনে জানান-‘আমি সবে মাত্র বিষয়টি দেখলাম। আমরা আলোচনা করে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।