বাংলাদেশে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি, বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: রবিবার ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:২০ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি, বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো সরকারি পর্যায়ে সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে। শনিবার এক্সপ্রেস নিউজ জানিয়েছে, প্রথম সরকারি অনুমোদিত চালান পাকিস্তানের পোর্ট কাসিম থেকে বাংলাদেশে রওনা হয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।  


বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন অব পাকিস্তানের (টিসিপি) মাধ্যমে পাকিস্তানের কাছ থেকে ৫০,০০০ টন চাল কেনার চুক্তি করেছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে চূড়ান্ত হওয়া এই চুক্তির আওতায় চালের চালান দুটি ধাপে পাঠানো হবে। প্রথম চালান ২৫,০০০ টন ইতোমধ্যে যাত্রা করেছে, আর দ্বিতীয় ব্যাচ মার্চের শুরুতে পাঠানো হবে।  


সরকারি পর্যায়ে এই চালান পাঠানোর মাধ্যমে পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশনের (পিএনএসসি) একটি জাহাজ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এটি সামুদ্রিক বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে।  


দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বাণিজ্য পুনরায় চালুর ফলে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুসংহত হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরাসরি শিপিং রুট চালু হলে ভবিষ্যতে আরও পণ্য বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা উভয় দেশের জন্য লাভজনক হবে।  


২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়। সরাসরি শিপিং চুক্তি সেই প্রচেষ্টার অংশ।  


বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে। এতে ভোক্তারা তুলনামূলক কম মূল্যে পণ্য পেতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে।  


এছাড়া, বর্তমানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালুর পরিকল্পনাও বিবেচনাধীন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাণিজ্য ছাড়াও পর্যটন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।  


বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা বাণিজ্য পুনরায় শুরু হওয়া দুই দেশের জন্যই ইতিবাচক। তবে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমীকরণ কীভাবে সামঞ্জস্য করা হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।