রংপুরের মিঠাপুকুরে ঘন কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছয়টি যানবাহন একে অপরকে ধাক্কা দেয়, ২৫ জন আহত হয়েছে। শনিবার সকালে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গড়ের মাথা মোড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনের মধ্যে দুটি যাত্রীবাহী বাস, একটি ট্রাক, একটি পিকআপ ও একটি কাভার্ডভ্যান ছিল। বড়দরগাহ হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে এবং মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মহাসড়কের ওই অংশে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা খুব কমে গিয়েছিল, ফলে চালকেরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একে অপরকে ধাক্কা দেন। এতে কয়েকটি গাড়ির সামনের গ্লাস ভেঙে যায় এবং কিছুটা ক্ষতি হয়। দুর্ঘটনার ফলে আহতদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় থাকায় তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর বড়দরগাহ হাইওয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। একই সঙ্গে রাস্তা পরিষ্কার করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে মাটি পড়ে থাকায় এবং ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল, যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে।
বড়দরগাহ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরপরই গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয় এবং বর্তমানে মহাসড়ক স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার জন্য মূলত ঘন কুয়াশা দায়ী, যা দৃষ্টিসীমা কমিয়ে দিয়েছিল এবং চালকদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে সমস্যা হচ্ছিল।
এদিকে, হাইওয়ে পুলিশ চালকদের সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দিয়েছে এবং ঘন কুয়াশায় গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চালানোর আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পীরগঞ্জসহ জেলার কয়েকটি স্থানে পৃথক পাঁচটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রংপুর হাইওয়ে পুলিশের সুপার মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে রংপুর অঞ্চলের জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ১৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২০ জন পুরুষ, ২২ জন নারী এবং ৪ জন শিশু ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে, তাই চালকদের গতি নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক আইন মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে। বিশেষ করে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মহাসড়কে চলাচলের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে, যাতে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো যায়।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মহাসড়কে প্রতিদিন বালু ও মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করায় রাস্তা আরও বেশি পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। দুর্ঘটনার পর মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হলেও পুলিশের তৎপরতায় তা দ্রুত স্বাভাবিক করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।