রাষ্ট্র সংস্কারের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা দিলেন - বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: বুধবার ৯ই অক্টোবর ২০২৪ ০২:১৩ অপরাহ্ন
রাষ্ট্র সংস্কারের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা দিলেন - বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১০টি প্রস্তাবনা দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের একটি রূপরেখা প্রকাশ করেছে। দলটির নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের ৯ অক্টোবর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।


জামায়াতে ইসলামী জানায়, এই প্রস্তাবগুলো শুধুমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রযোজ্য, নির্বাচিত সরকারের জন্য নয়। ডা. তাহের বলেন, “আমাদের মূলত ৪১টি প্রস্তাব আছে, তবে আজ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।”


মূল প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো, প্রধানমন্ত্রী পরপর দুই মেয়াদের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এছাড়াও সংবিধান সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। তারা মনে করেন, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।


জামায়াতের এই প্রস্তাবনাগুলো বিভিন্ন সেক্টরে আলাদা আলাদা সংস্কারের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আইন ও বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনের কার্যকারিতা, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। তাদের মতে, সংবিধানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারায় পরিবর্তন আনা জরুরি, যাতে কোনো সরকার অতিরিক্ত ক্ষমতা না পায় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অব্যাহততা রক্ষা হয়।


এছাড়া, জামায়াতের প্রস্তাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থার আরও বিকেন্দ্রীকরণ এবং স্বচ্ছতার দাবি জানানো হয়েছে। তারা মনে করেন, ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জামায়াতে ইসলামী দেশের মানুষের জন্য একটি গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট।


এই প্রস্তাবনাগুলোর আলোচনায় রাজনৈতিক মহলে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের নেতারা জামায়াতের এই প্রস্তাবনাগুলোর ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, প্রস্তাবনা অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করলে বর্তমান রাজনৈতিক সংকট কাটানো সম্ভব হতে পারে, আবার অনেকেই এটিকে রাজনৈতিক চাপে ফেলার কৌশল হিসেবে দেখছেন।


এখন দেখার বিষয়, এসব প্রস্তাব কেমন সাড়া ফেলতে পারে এবং তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।