নওগাঁর আত্রাই উপজেলা, উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত, বর্তমানে বিপদে পড়েছে নিষিদ্ধ চায়না জালের অবাধ ব্যবহারের কারণে। এ অঞ্চলের নদী, খাল-বিল ও জলাশয়গুলোতে অযাচিতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে চায়না ম্যাজিক জাল (রিংজাল), যা দেশীয় মাছ ও জলজ প্রাণীদের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই নদী ও খাল বিলে পানি কমে যাওয়ার কারণে চায়না জালের ফাঁদে পড়ে ধরা পড়ছে নানা ধরনের দেশীয় মাছ। বিশেষ করে গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টির ফলে পানির স্তর বাড়ায় প্রজনন মৌসুমে থাকা ডিমওয়ালা মাছগুলোও আক্রান্ত হচ্ছে। এতে করে মাছের প্রজনন কমে যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে মাছশূন্য হয়ে পড়ছে এ অঞ্চল।
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষিদ্ধ চায়না জালের কারণে মাছ ধরার অভ্যাস পরিবর্তন করতে হয়েছে। এ বছর জেলেদের জীবিকার টানাপোড়েন বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ মাছের সংকট মারাত্মকভাবে অনুভূত হচ্ছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সহ¯্রাধিক জেলে পরিবার এই পরিস্থিতির কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে আত্রাই মাছ বাজারের আড়তদাররা জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ব্যাপক আমদানি হলেও এবারে তেমন মাছ নেই। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “নিষিদ্ধ জালের ব্যবহারে মিঠা পানির মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তবে আমাদের মাছের ভান্ডার আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
এদিকে, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাকসুদুর রহমান জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার রোধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু অভিযানে জাল আটক করা হয়েছে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস জানান, “আমরা এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং অভিযান চলমান থাকবে।”
স্থানীয়রা আশা করছেন, প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলো কার্যকর হলে শীঘ্রই মৎস্যসম্পদ রক্ষিত হবে। তবে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। না হলে, বাংলাদেশের নদী মাতৃক সোনার বাংলায় মাছে-ভাতে বাঙ্গালীর ঐতিহ্য হুমকির মুখে পড়বে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।