বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে মাধবপাশা ইউপি চেয়ারম্যান এর সিদ্দিকুর রহমান এর বিরুদ্ধে। মারধরের ঘটনায় চেয়ারম্যান মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছে স্থানীয়রা। বিচারের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষ। মারধরের প্রতিবাদ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান এর দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ এবং ঝাড়ু মিছিল করেছে স্থানীয়রা।
সোমবার ১টার দিকে মাধবপাশা বাজার এলাকায় ঝাড়ু মিছিল বের করে স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষ। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরে তাকে অপসারণ এবং শাস্তির দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। মিছিলটি বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোতালেব হোসেন বলেন, জাকির তিন বারের নির্বাচিত মেম্বার। গ্রাম পুলিশ দিয়ে পরিষদে ডেকে এনে তাকে মারধর করেন চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান। কি কারনে জাকির মেম্বারকে মারধর করা হলো তা জানতে চাই। আমরা সুষ্ঠু তদন্তু করে সরকারের কাছে সিদ্দিকুর রহমান চেয়ারম্যানের বিচারের দাবি করছি। মেহনতি মানুষের জন্য সরকার যা বরদ্দা করেন তা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। আমাদের মেম্বারের যদি কিছু হয় তাহলে আমরা গ্রামাবাসী ছারবো না।
২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সারমনি আক্তার বলেন, সিদ্দিকুর চেয়ারম্যান ১৭ টন গরিবের চাল আত্মসাৎ করেছেন। তখনও মিছিল করে প্রতিবাদ করেছি। এবার আমাদের ২নং ওয়ার্ডে বরাদ্দকৃত টিউওবয়েল কেটে দিছেন চেয়ারম্যান। তার প্রতিবাদ করায় জাকির মেম্বারকে মারধর করছেন সিদ্দিক চেয়ারম্যান। আমরা চেয়ারম্যানের বিচারের দাবি জানাই।
মাধবপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, জাকির হোসেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। সে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য। গতকাল পরিষদে ডেকে এনে মারধর করা হয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানের বিচারে দাবি করছি। সিদ্দিকুর চেয়ারম্যান গরিব অসহায় মানুষের জন্য সরকারের ভাতার কার্ড দেবার কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে। আমরা দুর্নীতিবাজ এই চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করছি।
জানা গেছে রবিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ২ টার দিকে মাধবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান ও ইউপি সদস্য জাকির হোসেন এর মধ্যে বরাদ্দকৃত ২৬ টি টিউবওয়েল ভাগাভাগি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই সদস্য চেয়ারম্যানকে গালমন্দ করেন ইউপি সদস্য। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চড়-থাপ্পর দেন চেয়ারম্যান। পরে পরিষদের সচিব ও সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। মাধবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন মাধবপাশা ইউনিয়ন পরিষদে এডিপি ও জনস্বাস্থ্যের ২৬ টি টিউওবয়েল এসেছে। সেখান থেকে একটি টিউওবয়েল আমাকে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমি টিউবওয়েল এর কথা বলতেই চেয়ারম্যান আমার উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। অনেক গালাগালি করেন। এক পর্যায়ে আমাকে মারধর করে ও লাঠি পেটা করেন। শুধু আমার সাথে নয় পরিষদের সকল সদস্যদের সাথে তার মতবিরোধ রয়েছে।
মাধবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবুল বাসার বলেন, রবিবার ২টার দিকে চেয়ারম্যান ও সদস্য জাকির হোসেন এর মধ্যে টিউবওয়েল নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দু’জনই উত্তেজিত হয়ে যান এবং তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আমি এবং কম্পিউটার অপারেটর মোসাঃ খাদিজ আক্তার সুমি তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করি।
এদিকে অভিযুক্ত মাধবপাশা ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পরিষদে ২৬ টি টিউবওয়েল বরাদ্দ এসেছে। কোন ওয়ার্ডে কয়টা টিউবওয়েল বরাদ্দ দেওয়া হবে সে ব্যাপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেশের বাহিরে আছে। সে আসলে সিদ্ধান্ত হবে। এর আগে ইউপি সদস্য জাকির পরিষদে এসে গালিগালাজ শুরু করে। এবং তার টিউবওয়েল বুঝে চায়। আমি তাকে বলছি সব মেম্বারদের নিয়ে একসাথে বসে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে। এই কথা বলায় সে আমাকে উত্তেজিত হয়ে মারতে আসে। এসময় আমি তাকে প্রতিহত করে পরিষদ থেকে বের করে দেই। বিষয়টা ভিন্ন খাতে নিতে আমার প্রতিদন্দ্বী সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন অপপ্রচারণা চালাচ্ছে, মিছিল মিটিং করাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।