প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ঘোষণা দেওয়ার পর অনেক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ শুনতে হয়েছে। সেই অপমান, সেই ব্যঙ্গগুলি শুনেও আজকে কিন্তু বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করেছি।শনিবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে দুদিনব্যাপী বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট-২০২৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম বাংলাদেশ হবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। অনেক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ শুনতে হয়েছে সে সময়। অনেক কথা শুনতে হয়েছে এবং বলেছে- এটি আবার কে ব্যবহার করবে। ডিজিটাল আবার কী, এটি কী।
তিনি বলেন, তখন বিদ্যুতের অভাব ছিল, মাত্র ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ চলে গেলেই বলতো আওয়ামী লীগ সরকার এসেছে, বিদ্যুৎ চলে গেছে, এ তো ডিজিটাল বাংলাদেশ। কোন একটা কারও কিছু হলে, সেটা ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে আমাদের ব্যঙ্গ করা হতো।
সরকারপ্রধান বলেন, সেই অপমান সেই ব্যঙ্গ শুনেও আজকে কিন্তু বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আমরা করেছি। অবশ্য রাজনীতি করতে গেলে সরকার চালাতে গেলে সমালোচনা শুনতেই হবে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমার লক্ষ্যটা যদি স্থির থাকে, আর যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে এটা আমাকে করতে হবে তাহলে কোনো বাধাই বাধা না, কোন ব্যঙ্গই ব্যঙ্গ না। ব্যঙ্গই সাফল্য এনে দেয়, এটি আমরা প্রমাণ করেছি।
১৭ কোটি মানুষের দেশে ১৮ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যার চেয়ে সিম ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণ সবাই একটা ফোন ব্যবহার করে না, দুটি-তিনটি ফোনও ব্যবহার করে। সে জন্য আজকে বাংলাদেশে ১৮ কোটি সিম ব্যবহার হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার এলাকা টুঙ্গিপাড়া, একেবারে রিমোট এলাকা। যেখানে জনসভা করতে গেলে আমাকে নৌকার ওপর বা কচুরিপানার ওপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতে হয়েছে। আমার কথা যারা শুনতে এসেছেন তারা হয়তো নৌকায় নৌকায় অথবা পানিতে দাঁড়ানো- এরকম একটা অবস্থা ছিল। ছিন্ন বস্ত্র, পেটে খাবার নেই। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমি গিয়েছে। মঙ্গাপীড়িত এলাকা, দুর্গত এলাকা, রাস্তাঘাট নেই- এ অবস্থা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন আগে আমি আমার এলাকায় গেলাম। আমি রাস্তাটা করে দিয়েছি, কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সেখান থেকে যখন আসি, দেখলাম রাস্তার পাশে ছেলেমেয়ে সবাই ভালো কাপড়-চোপড় পরে দাঁড়ানো। প্রত্যেকের হাতে মোবাইল ফোন, সমানে ছবি তুলছে।
তিনি বলেন, কারও কারও মোবাইল ফোনে চারটা করে ক্যামেরা ফিট করা। আমি বললাম আমার মোবাইল ফোনে মাত্র দুটি ক্যামেরা, ওদের দেখলাম চারটা। স্মার্ট বাংলাদেশ শুধু এখানে (শহরে) নয়, তারা যে গ্রামের মানুষ তারাও যে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে এটিই সব থেকে বড় কথা। এটি গর্বের কথা। মাত্র কয়েক বছরে এ পরিবর্তনটা আনতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামে বসেও কাজ করছে। আমরা শুরু করেছিলাম ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’। এ কর্মসূচি মানুষের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। গ্রামে বসে মানুষ বিদেশে অর্থ উপার্জন করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।