৭২ ঘন্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২০শে মার্চ ২০২৩ ০৭:৫১ অপরাহ্ন
৭২ ঘন্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ২

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে কিশোর মো. সোহান শেখ (২০) হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ দিন পর পুলিশ রাজবাড়ী জেলার কালুখালী থেকে তার দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো দৌলতদিয়া যৌনপল্লি সংলগ্ন শামছু মাষ্টার পাড়ার শহিদ শেখ এর ছেলে নিরব শেখ (১৭) ও শাহাদৎ মেম্বার পাড়ার মাদার কাজীর ছেলে হায়াত কাজী (১৭)। 


নিহত সোহান দৌলতদিয়া সিদ্দিক কাজী পাড়ার আলামিন শেখ এর ছেলে। গত বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে যৌনপল্লি সংলগ্ন মুক্তি মহিলা সমিতির নবনির্মিত ভবনের একটি কক্ষ থেকে বালু ও ইট চাপা দেয়া অবস্থায় সোহানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ সোমবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে

গোয়ালন্দ ঘাট থানায় পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করেন। বক্তব্য উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার। 


সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তারকৃত নিরবের সঙ্গে নিহত সোহানের বাক বিতন্ড হয়। প্রায় ১৫ দিন আগে দৌলতদিয়া কেকেএস স্কুল মাঠে নিরবকে মারধর করে সোহান। নিরবের আরেক বন্ধু হায়াত কাজীকে মোবাইলফোন চোর ও মাদকসেবী বলে গালমন্দ করে অপবাদ দেয়। এই ক্ষোভে নিরব ও হায়াত কাজীসহ তাদের বন্ধুরা মিলে সোহানকে হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করে।


বুধবার (১৫ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে যৌনপল্লির জনৈক জাহাঙ্গীরের দোকানে সোহানকে বসে থাকতে দেখে নিরব আর হায়াত গাঁজা সেবনের জন্য ডেকে নেয়। যৌনপল্লি সংলগ্ন মুক্তি মহিলা সমিতির নবনির্মিত ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে কাঠের বাটাম ও ইট দিয়ে মাথাসহ শরীরে আঘাত করে। নিরবের কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে গলা, বুক, চোখ, কানসহ বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে বালু ও ইট দিয়ে চাপা দিয়ে রেখে যায়। খবর পেয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে। 


পুলিশ জানায়, প্রযুক্তি ও গুপ্তচর ব্যবহার করে পুলিশ শনিবার (১৮ মার্চ) ভোরারতের দিকে অভিযান চালিয়ে গ্রামের জনৈক আহমেদ শেখ এর বাড়ি থেকে সোহানের ব্যবহৃত মুঠোফোন ও হায়াত কাজীর পরিধেয় পোশাকসহ একটি ব্যাগ জব্দ করে। তার আগে নিরব ও হায়াত পালিয়ে যায়। পরদিন রোববার অভিযান চালিয়ে কালুখালীর হরিনবাড়ীয়া প্রামানিক পাড়া হতে নিরব ও হায়াতকে গ্রেপ্তার করে। তাদেরকে নিয়ে পুলিশ দিনভর অভিযান চালিয়ে বিকেলে যৌনপল্লির সংলগ্ন একটি বাড়ির পাশ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু উদ্ধার করে। নিরবের দাদীর বসত ঘর থেকে হত্যাকান্ডের সময় ব্যবহৃত হায়াত কাজীর রক্তদাগযুক্ত শার্ট উদ্ধার করে রাতেই তাদের নিয়ে থানায় হাজির হয় পুলিশ।

  

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় আসামীদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আজ (সোমবার) দুপুরে রাজবাড়ীর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ এখনো মাঠে কাজ করছেন।