ভূঞাপুরে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে ঘুড়ি ফাউন্ডেশন!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: শুক্রবার ১০ই জুন ২০২২ ০৪:২০ অপরাহ্ন
ভূঞাপুরে  ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে ঘুড়ি ফাউন্ডেশন!

মুক্ত আকাশে মানবতার ঘুড়ি" এই স্লোগানকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ঘুড়ি ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক সংগঠনের আত্ন-প্রকাশ ঘটেছে।একদল তরুণ-তরুণী তাদের নিজেদের জমানো টাকা, এবং সেচ্ছাশ্রমকে পুঁজি করে তিল তিল করে গড়ে তুলেছে এই সংগঠন। 


জানা যায়, ঘুড়ি ফাউন্ডেশন একটি সামাজিক এবং সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন আয়ের উৎস নাই।তবুও মানবতার ডাকে পিছিয়ে নেই তারা।সেচ্ছায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তাদের মূল উদ্দেশ্য। আর্ত মানুষের ডাকে নিবেদিত প্রাণ এই সংগঠনের সাথে যুক্ত প্রতিটি সদস্য।


আধা লিটার পানি কিনতে টাকা লাগলেও ঘুড়ি ফাউন্ডেশনের সদস্যরা শত শত ব্যাগ রক্ত বিনামূল্যে দিচ্ছে বিভিন্ন রোগীদেরকে।সংগঠনের তালিকায় এখন পর্যন্ত ৪০০ ব্লাড ডোনার রয়েছে।তারা প্রয়োজন অনুয়ায়ী নির্ধারিত রোগী কে বিনামূল্যে রক্ত দান করে থাকে।এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠনের সদস্যদের দেখা যায় অনাহারীর মুখে খাবার তুলে  দিতে।সামাজিক যে কোন কাজে স্বেচ্ছায় হাত বাড়িয়ে দিতে সদা প্রস্তুত এই সংগঠন। 


করোনাকালীন মহামারীর সময়ে হেল্প ফর হিউম্যানিটি নামক ইভেন্টে প্রথম ধাপে ৫৪ এবং পরের ধাপে ১১২ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।গত রমজান মাসে ৩৪ টি পরিবারের মাঝে ঈদের উপহার তুলে দেয়া হয়। অসহায় পরিবারকে সাবলম্বী করে তুলতে বেশ কয়েকটি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয় পোশাক।


গত এক মাসে সংগঠনটি মোট ৪০ জন রোগীকে বিনামূল্যে রক্ত দান করতে সক্ষম হয়েছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে ব্যানার,ফেস্টুন।যাতে অতি সহজেই রোগী তার কাঙ্খিত  ব্লাড ডোনার খুঁজে পায়।সেবা পেয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে মানিক বলেন,আমার বোনের যখন রক্তের প্রয়োজন পড়লো সাথে সাথে উনারা এগিয়ে  এসেছেন।তাদের ঋণ শোধ করার মতো নয়।দোয়া করি তারা যেন মানবতার কল্যাণে কাজ সারাজীবন কাজ করতে পারে।


ঘুড়ি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী মাহজাবিন মুনিয়া বলেন,'মুক্ত আকাশে মানবতার ঘুড়ি স্বেচ্ছায় মোরা রক্তদান করি,মানবতার ঘুড়ি এগিয়ে যাক, অসহায় রোগী রক্ত পাক।এই স্লোগানকে সামনে রেখে রক্তদানে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি তরুণ থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষদের। একসময় যারা রক্তদানকে কঠিন কাজ ভাবতো আমাদের রক্তদানের ছবিগুলো দেখতে দেখতে এখন তারা মানতে বাধ্য হয়েছে এটি খুবই সহজ এবং মহান একটি কাজ। যার ফলস্বরূপ এখন অধিকাংশই নতুন রক্তদাতা তৈরি হচ্ছে যারা অনলাইনে ছবি দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের কাছে ইচ্ছাপোষণ করে রক্তদান করতে।


এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ ইশরাত জাহান বলেন, ঘুড়ি ফাউন্ডেশন যে সকল সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করে আমি তাদের সাধুবাদ জানাই, ভবিষ্যতে তারা এধরনের কাজ অব্যাহত রাখবে এবং আমি সর্বদা তাদের মঙ্গল কামনা করি।