বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পলাতক স্বামী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৪শে মে ২০২২ ০৬:০০ অপরাহ্ন
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পলাতক স্বামী

কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে নুরজাহান পারভীন (৪২) নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।


মঙ্গলবার (২৪ মে) সকালের দিকে ওই বাসার বেডরুম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই দম্পতির সাইয়াম ও শ্রেয়া নামের দুই সন্তান রয়েছে।


নিহতের পরিবারের অভিযোগ, নুরজাহানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালাতে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নিহতের শরীরের জখমের চিহ্ন আছে বলেও দাবি করেছে পরিবারের লোকজন।


এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলামের শহরের কমলাপুরে দুই তলা একটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ির নিচ তলায় থাকতেন পরিবার নিয়ে। অর্জন দাস আগরওয়ালা সড়কের এ বাড়ি থেকে মঙ্গলবার সকালে নুরজাহানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যে ঘরে তিনি আত্মহত্যা করেন সেটিতে দুটি দরজা ছিল। সদর দরজা বন্ধ থাকলেও পেছনের দরজাটি খোলা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।


এদিকে খবর পেয়ে সকালে বাড়ি থেকে নুরজাহানের মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সেখানে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে পরিবারের লোকজন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মিনাপাড়ায় নিয়ে যায়।


নিহতের সন্তানরা জানান, প্রায়ই আব্বু আম্মুকে মারধর করতো। গত পরশুদিনও ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে বেদম মারপিট করে বলে জানায় নিহতের সন্তানরা।


নিহতের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিয়ের পর থেকে তার বোনকে মারধর করে আসছিল দুলাভাই। কয়েকদিন আগেও আপাকে বেদম মারপিট করা হয়। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় পরিবার থেকে মামলা করা হবে বলেও জানান জাহাঙ্গীর।


কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, নুরজাহানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে নানা স্থানে জখম ছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর হত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।


কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে আত্মহত্যা করেছে। তারপরও আমরা তদন্ত করে দেখছি। পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এদিকে স্ত্রীর মরদেহ পাওয়ার পর থেকে নজরুল ইসলাম গা ঢাকা দিয়েছেন। তার ফোনে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।


একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষক নজরুল ইসলাম মাদকাসক্ত ছিলেন। এ নিয়ে পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলে আসছিল।