শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি, তিতুমীর কলেজে অনশন চলছে তৃতীয় দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
উত্তম গোলদার
প্রকাশিত: শনিবার ১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:৩৬ অপরাহ্ন
শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি, তিতুমীর কলেজে অনশন চলছে তৃতীয় দিন

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সাত দফা দাবির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি তুলে তৃতীয় দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাদের এই দাবি পূরণের জন্য শনিবার বিকেল ৪টার মধ্যে ঘোষণা না দিলে, তারা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকায় ব্যারিকেড কর্মসূচি পালন করবেন। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।


গতকাল, অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, বর্তমানে ১০ জন শিক্ষার্থী অনশনে আছেন। আন্দোলনকারী নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ জানিয়েছেন, দাবির ব্যাপারে যদি কোন পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে তারা আগামীকাল সড়ক অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।


গত শুক্রবার রাতে গুলশান-১ এলাকায় তারা সড়ক অবরোধ করেছিলেন, এবং রাত সাড়ে ১১টায় তা তুলে নেওয়া হয়। এর আগে, তারা সারা দিন কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের দাবি সঠিকভাবে এবং দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে আরও বড় কর্মসূচি নেওয়া হবে।


তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন শুরু করেন ৭ জানুয়ারি, যখন তারা কলেজের প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন। ১৮ নভেম্বর তারা আরও বড় আন্দোলন করেন, যার মধ্যে মহাখালীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধের কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেই সময়ও তাদের একাডেমিক সেশন, ভর্তি কার্যক্রম এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। আন্দোলনকারীরা এই বার্তা দিতে চাচ্ছেন যে, তিতুমীর কলেজের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ অত্যন্ত জরুরি।


শিক্ষার্থীরা আরও জানান, গত ৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের দাবির বিষয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল, তবে তারা অভিযোগ করেছেন যে, কমিটি সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার তৈরি করার জন্য জমি এবং অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা।


এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গত সপ্তাহে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তবে তারা তাদের দাবি নিয়ে কোনও আপস করতে রাজি হয়নি। তারা জানিয়েছে, তাদের দাবি যতদিন না মেনে নেওয়া হবে, ততদিন আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। 


অপরদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে এবং তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তাদের মনোবল দৃঢ় রয়েছে এবং দাবি পূরণের লক্ষ্যে তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।


এই আন্দোলন কেবল তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, বরং পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা এবং দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অবস্থান স্পষ্ট, আর তা হলো—তাদের দাবি না মেনে নিলে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।