আমরা কখনও জিয়াবর্ষ করব না: বিএনপি
দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানেরকে নিয়ে কখনও জিয়াবর্ষ পালন করা হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ ছাত্রফোরামের আয়োজনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৪ তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সোহেল বলেন, ‘আমাদের নেতা জিয়াউর রহমানকে মানুষ হিসেবে আমাদের মাঝে রাখতে চাই। নতুন করে জিয়াবর্ষ কখনোই আমরা করবো না। কারণ বাংলাদেশের প্রতিটি বর্ষ জিয়াবর্ষ। জিয়াউর রহমানের অবদান অস্বীকার করে আমাদের এক পা আগানোর কোনো অবস্থা নেই।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মুজিববর্ষ উদযাপন নিয়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন,
‘অফিসে দোকানে সর্বত্র চাঁদাবাজি চলছে। এমনিতেই মানুষের ব্যবসা নেই। ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের দুরবস্থা, বড় ব্যবসায়ীদের অবস্থা ভালো না। এরমধ্যে আবার চাঁদাবাজি। নেতাকে ভালোভাবে স্মরণ করেন। সুন্দরভাবে স্মরণ করেন সমস্যা নেই। নেতার ছবি পেছনে লাগিয়ে সামনে উচ্ছৃঙ্খল তরুণ-তরুণীরা নাচবে আর বলবে আখ মারে, আখ মারে।’
তিনি বলেন, ওনাদের বলতে চাই দেখেন মানুষকে মানুষের জায়গায় রাখেন, দেবতা বানাবেন না। ৭২-৭৫ পর্যন্ত আপনাদের নেতাকে এইভাবে দেবতা বানানোর চেষ্টা হয়েছে। পরিণতি কি হয়েছে তা আর বলতে চাই না। আপনাদের মেয়ে তাই বলেছে জাতি আজ ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। আমাদের কথা নয়। আবার সেই খেলায় মেতেছেন।
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের ৫৪ টি নদীর পানি সমস্যার সমাধান হলো না। কিন্তু নামমাত্র রেভিনিউর বিনিময়ে আমরা ট্রানজিট দিয়ে দিলাম। যে লক্ষ্যে তারা কাজ করেছিল সে কাজ সফল হয়েছে এবং এখনো সফল হচ্ছে।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়া আমাদের মাঝে নেই, খালেদা জিয়া কারাবন্দি এবং তারেক রহমান দেশের বাইরে। কিন্তু আমরা আছি। আজ হোক কাল হোক বাংলাদেশকে ঘিরে আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর যে ষড়যন্ত্র আমরা বেঁচে থাকতে সে স্বপ্ন সফল হতে দেব না। বেগম খালেদা জিয়া নির্দোষ, অথচ তাকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
সোহেল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আস্থার জায়গায় থাকার কথা। সেই চেয়ারগুলোতে যারা আছেন তারা কি তাদের শপথ রাখতে পারছেন? আপনারা ওই চেয়ারে বসে লাল টেলিফোনে কথা বলে খালেদা জিয়ার রায় লিখবেন এমনটি কথা ছিল না। বিচারপতির চেয়ারে বসে সবাই গোলামী করছেন। একদিন না একদিন বিচারপতি আপনাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সোহেল বলেন, দেশ এখন নতুন একটি গণআন্দোলনের জন্য তৈরি। সেই গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য আসলে আমরা কেউই নিজেদের তৈরি করতে পারিনি। মিছিলে নামার পরই নীল রঙের পোশাক দেখে দৌড়ে পালানোর মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
সোহেল বলেন, আসুন একটু সাহস করে মাঠে নামি। আমাদের পিছে যে বাঁশি বাজায় একটু পিছনে ঘুরে দেখি কারা বাঁশি বাজায়? তাদের বলি তোমরা যে লাঠি দিয়ে আমাদের মারছো ওই লাঠি আমাদের টাকায় কেনা। যে পোশাকটি তোমরা পড়েছ ওই পোশাকটিও আমাদের টাকায় কেনা। এইভাবে যদি আমরা দাঁড়াই পরিস্থিতি ঘুরে যাবে। আমাদের নেত্রী মুক্তি পাবে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলালের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, সাবেক ছাত্রদল নেতা নাজমুল হাসান,বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।