ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ‘গণহত্যা’: মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার ২১শে অক্টোবর ২০১৯ ০৮:২৬ অপরাহ্ন
ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ‘গণহত্যা’: মোশাররফ

ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত বলে অভিযোগ করে ওই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে দলটি। সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে মোশাররফ হোসেন বলেন, কোনো ধর্ম নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করা এই দেশের আবহমানকালের ঐতিহ্যে নেই। আমরা মনে করি, ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। যে কারণে ভোলাকে রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়ার দাবি জানায় বিএনপি।

ভোলার ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ দাবি করে তিনি বলেন, আমরা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, জনগণকে যারা অবজ্ঞা করে তাদের পরিণতি শুভ হয় না। গণমানুষের জানমাল নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না, যথেষ্ট হয়েছে। ভোলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে দিলে কি সরকারের পতন হয়ে যেত এমন প্রশ্ন করে ড. মোশাররফ বলেন, কিসের এত ভয়?  কাদের প্রতি ভয়?  ঘটনার শুরু শুক্রবার। ঘটনার পরে পুলিশের ব্যাখ্যায় মনে হয়, তারা পুরো বিষয়টি আগে থেকেই জানত। তাহলে এত সময় পেয়েও সামাল দিতে পারল না কেন? এর কারণ সরকার ও পুলিশের কাছে জনতার কোনো মূল্য নেই। তাই বিএনপি মনে করে এ ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত।

পুলিশের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ভোলায় পুলিশের এমন মারমুখী আচরণ ও নিষ্ঠুরতা ক্ষমার অযোগ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জবাবদিহিতা করতে হয় না বলেই সামান্য কিছুতেই নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা যেন এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এই ভোটারবিহীন সরকারের দুঃশাসনে মানুষের জীবনের মূল্য এখন পশু-পাখির চেয়ে কমে গেছে।

তিনি বলেন, বিক্ষোভকারীরা একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য জড়ো হয়েছিল, এটি তো কোনো অপরাধ নয়। তারা কোনো ভাঙচুর করেনি, কারও ক্ষতি করেনি। প্রতিবাদ করা কী অন্যায়? তারা কী কোনো দাঙ্গায় লিপ্ত হয়েছিল? যেকোনো ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্যে মানুষের বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা নতুন কিছু নয়। এটাই স্বাভাবিক।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, স্থানীয় প্রশাসন সুকৌশলে ভোলার মানুষের প্রতিবাদটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে। আপনারা ভোলার হত্যাকাণ্ডের পর সরকার ও প্রশাসনের বক্তব্য এবং মন্তব্য শুনলে অনুধাবন করতে পারবেন তারা দুঃখ প্রকাশ না করে হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছে। আর প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ ভাষায় প্রতিবাদকারীদের প্রতি হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব