প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৮
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হওয়ার ৩৭ ঘণ্টা পার হলেও চূড়ান্ত ফলাফল এখনও ঘোষণা হয়নি। নির্বাচনে প্রকাশ্য অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে রায় মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের নারী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আঞ্জুমান ইকরা।
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে আঞ্জুমান ইকরা বলেন, জয়-পরাজয়ের উর্ধ্বে সুষ্ঠু ভোটের জন্য আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে দায়বদ্ধ ছিলাম। প্রশাসনের প্রকাশ্য অনিয়মের পরও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমাদের রায় মেনে নিতে হবে। তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজেদের ভুলগুলো পুনর্বিবেচনা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তাঁকে এজিএস প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ করে দিয়েছে। দলের দায়িত্বশীলদের প্রতি অনুরোধ, নিজেদের ত্রুটি যাচাই করে ভবিষ্যতে আরও কার্যকরভাবে কাজ করা। তিনি আশাবাদী, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে একটি নতুন ক্যাম্পাস গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
একইভাবে জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, বিগত সময়ে আওয়ামী শাসনের কারণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যে ক্ষতি হয়েছে তার প্রভাব এখনো বিদ্যমান। ৩৩ বছর পরের এই নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু ত্রুটি এবং অনিয়ম হয়েছে, যা শোকজের দাবি রাখে।
তিনি উল্লেখ করেন, সার্বিকভাবে গণতান্ত্রিক চর্চার সঙ্গে যায় না যদি নির্বাচনের ফলাফলের একচেটিয়াভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়, বিশেষত যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী এটিকে ব্যর্থ নির্বাচন মনে করছে না। বর্তমান প্রজন্ম দায় চাপানোর রাজনীতি অপছন্দ করে। তাই প্রকৃত কাজ ও আত্মসমালোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করা জরুরি।
অন্যদিকে, শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনে সংবাদ সম্মেলনে জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি এবং বিভিন্ন অনিয়ম হয়েছে। পদত্যাগ না করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া হয়েছে, তবুও তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে কারচুপির কারণে ভোট বর্জন করে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিলটি নতুন কলাভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে জাকসু নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে শেষ হয়।
এ ঘটনার মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজনীতিতে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা আরও প্রমাণিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আশা করছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম আর ঘটবে না এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় থাকবে।