প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ভিপি পদে শিবির সমর্থিত প্রার্থী সাদিক কায়েম বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। বুধবার সকালে ঘোষণা করা ফলাফলে দেখা যায়, ১৮ হলের মোট ফলাফলে সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে সহসভাপতি নির্বাচিত হন।
ভিপি পদে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী আবিদ, যিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৫৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা পান দুই হাজার ৫৪৯ ভোট। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের প্রার্থী আব্দুল কাদের ৬৬৮ ভোট পান এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পান ১ হাজার ৮১৫ ভোট। ফলে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সাদিক কায়েম ভিপি পদে জয়লাভ করেন।
জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল তীব্র। নির্বাচনের ফলে এসএম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ তানভীর বারী হামিম ৫ হাজার ২৮৩ ভোট পান। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবু বাকের মজুমদার ৮৪৫ ভোট পান এবং প্রতিরোধ পর্ষদের প্যানেলের মেঘমল্লার বসু পান ৪ হাজার ৬৪৫ ভোট।
সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে ওঠে। এই পদে মহিউদ্দীন খান ৯৫০১ ভোট পেয়ে জয়ী হন। অন্যদিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পান ৪২৫৮ ভোট। ফলে এই পদেও বড় ব্যবধান তৈরি হয়।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ ছিল প্রবল। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে মোট ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণে অংশ নেন মোট ৩৯ হাজার ৭৭৫ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ছিলেন ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ভোটার ছিলেন ১৮ হাজার ৯০২ জন।
এবারের নির্বাচনে ডাকসুর ২৮টি পদে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে নারী প্রার্থী ছিলেন ৬২ জন। ভিপি পদে ৪৫ জন, জিএস পদে ১৯ জন এবং এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ২৫ জন। নারী প্রার্থীদের মধ্যে ভিপি পদে ছিলেন পাঁচজন, জিএস পদে একজন এবং এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন চারজন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ভোটগ্রহণে অংশগ্রহণের হার ছিল ৮০ শতাংশের বেশি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবি করা হলেও কারচুপির অভিযোগও উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষ থেকে। তবুও, ফলাফলের মাধ্যমে শিবির সমর্থিত প্রার্থীর বড় ধরনের বিজয় রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনা তৈরি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের কাছে মিনি পার্লামেন্ট নামে পরিচিত। এবারকার নির্বাচনের ফলাফল ক্যাম্পাস রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।