প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১৮:১
নরসিংদীর মাধবদীর চৌয়া এলাকায় শহিদ বীর আরমান মোল্লার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারার পেছনে যারা জীবন দিয়েছেন, শহিদ আরমান মোল্লা তাদের অন্যতম। অথচ সেই শহিদের স্ত্রী ও সন্তানদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত মর্মান্তিক।
রিজভী প্রশ্ন তোলেন, যারা এখন উপদেষ্টা পদে আছেন, দল গড়ছেন বা আন্দোলনের সুফল ভোগ করছেন, তাদের কাছে শহিদদের তালিকা নেই কেন? তারা নিজেদের বিপ্লবের একক দাবিদার মনে করলেও শহিদদের পরিবারের খবর রাখছেন না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অবহেলার পরিচয় বহন করে।
বিএনপি নেতার ভাষ্য অনুযায়ী, শহিদ আরমান মোল্লা শুধু একটি পরিবারের কর্তা ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন একটি আদর্শের ধারক, যিনি গণতন্ত্র ও ন্যায়ের দাবিতে জীবন দিয়েছেন। এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আরমানের স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য উপহার সামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান করেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনার সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পরই তারেক রহমান বিষয়টি অবগত হন এবং সঙ্গে সঙ্গে আরমানের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশে আমরা আজ এখানে উপস্থিত হয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
রিজভী আরও জানান, শহিদ আরমানের সন্তানদের পড়ালেখা ও জীবনধারণে সহায়তা করা হবে। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, উপদেষ্টা আবুল কাশেম, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আ. রশিদসহ অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
গত বছরের ২১ জুলাই নরসিংদীর শিলমান্দী ইউনিয়নের সামনে আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আরমান। তার মৃত্যু ছিল রাজনৈতিক সহিংসতার একটি করুণ উদাহরণ, যা আজও তার পরিবারের দুঃসহ স্মৃতি হয়ে আছে।
বর্তমানে তার স্ত্রী সালমা বেগম তাদের তিন সন্তান নিয়ে দারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। বড় মেয়ে মাহি (১০) ও ছেলে রাফিকে (৭) তিনি দিয়েছেন একটি এতিমখানায়, আর ছোট মেয়ে আফরামনিকে (৩) নিয়ে নিজেই লড়াই করছেন টিকে থাকার জন্য।
শহিদের এমন পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর এই উদ্যোগ সামাজিক দায়িত্ববোধ ও রাজনৈতিক মানবিকতার একটি স্পষ্ট দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।