গোপালপুরে ইটভাটা মালিকদের ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ নুর আলম উপজেলা প্রতিনিধি - গোপালপুর , টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৪ঠা মার্চ ২০২৫ ০৫:৩৬ অপরাহ্ন
গোপালপুরে ইটভাটা মালিকদের ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল ১১টায় ইটভাটা মালিকরা তাদের ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি ছিল ইটভাটা মালিকদের পক্ষ থেকে পরিবেশগত নিয়মাবলী এবং ইটভাটা পরিচালনায় চলমান হয়রানি বন্ধের দাবি জানাতে। ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি হামিদুর রহমান সোনা, সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল সহ অন্যান্য ইটভাটা মালিকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।


এ সময় মালিকরা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এবং সংশোধিত ২০১৯ আইনের আওতায় জিগজাগ ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের মতে, এই শিল্পে প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে এবং এর সাথে যুক্ত ৫০ লক্ষ পরিবার বা প্রায় ২ কোটি মানুষের রুটি-রোজি এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। ইটভাটা বন্ধ হলে এই বিশাল জনগণের আয় বন্ধ হয়ে যাবে এবং তাদের জীবনযাত্রা চরমভাবে বিঘ্নিত হবে।


এছাড়াও তারা জানান, অধিকাংশ ইটভাটার বিপরীতে এক কোটি টাকার উপরে ব্যাংক লোন রয়েছে, যা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে সেই ঋণগুলো অনাদায়ী থেকে যাবে, যা দেশের ব্যাংকিং খাতে একটি বড় প্রভাব ফেলবে। ইটভাটার মালিকরা আরো উল্লেখ করেন, তারা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে আধুনিক জিগজাগ ভাটা স্থাপন করেছেন এবং তাদের লক্ষ্য হচ্ছে সরকার নির্দেশিত বায়ুদূষণ রোধে অবদান রাখা। তবে, তাদের মতে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখনও এই সমস্যার সমাধান হয়নি।


এছাড়া, মালিকরা দাবি করেছেন, ড্রাম চিমনী, ফিক্সড চিমনী ও লাকড়ি দিয়ে পোড়ানো ইটভাটা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতি তারা সহমত, তবে তারা উল্লেখ করেন যে, জিগজাগ ইটভাটায় কোনো প্রকার হয়রানি বা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা যাবে না। যদি তেমনটি করা হয়, তারা ভ্যাট ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করে দেবেন। তাদের দাবি, ইটভাটা বন্ধ করতে হলে সরকারিভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং ইটভাটার মাটি কাটার জন্য ডিসি কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার বিধানও বাতিল করতে হবে।


মালিকরা আরো দাবি করেন, ইটভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র, ডি.সি লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স এবং অন্যান্য কাগজপত্রের নবায়ন প্রক্রিয়ার সময় কেন্দ্রীয় ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলকভাবে জমা দেওয়ার বিধান থাকতে হবে। তারা ইটভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, ইটভাটা পরিচালনায় একটি পূর্ণাঙ্গ ও দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত, যাতে এই শিল্পের সঠিক দিকনির্দেশনা থাকে।


এদিকে, গোপালপুর ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ আশা করছেন, এই স্মারকলিপি এবং মানববন্ধনের মাধ্যমে ইটভাটার সমস্যার সমাধান হবে এবং তাদের সকল দাবি সরকারের বিবেচনায় আসবে।