জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল জেলার আহবায়ক সিটি কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট এ কে এম মুরতজা আবেদীন এর উপর হামলার প্রতিবাদে সাংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ.কে.এম মোস্তফা লিখিত বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এর পরপর ৫বার নির্বাচিত কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট এ কে এম মুরতজা আবেদীন। তার ওপর গতকাল (০৩ সেপ্টেম্বর) শ্রমিকলীগ বরিশাল মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্না ও তার সহগযোগীরা পূর্বপরিকল্পিত হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে মুরতজা আবেদীনের লাইসেন্স করা পিস্তল ছিনতাই করতে অপপ্রয়াস চালায় যা ভিডিওতে পরিস্কার। মুরতজা আবেদীনের ওপর পূর্বপরিকল্পিত হামলা করার পরও মান্না মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে প্রশাসন সহ বরিশাল বাসীকে বিভ্রান্ত করেছে। যা মুরতজা ভাইয়ের নিজের করা ভিডিওতে দেখা গেছে।
মান্নাকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার সময় মুরতজা আবেদীন বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড সেটেলমেন্ট অফিস থেকে অফিসিয়াল কাজ শেষে রাস্তায় বের হলেই পরিকল্পিত ভাবে মান্না তার বাহিনী নিয়ে রাস্তার উপর প্রকাশ্য দিবালকে অশালীন ভাষায় গালাগালি করে। পরবর্তীতে অতর্কিত হামলা চালায় পেছন থেকে গলা জাপটে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যাচেষ্টা চালায়। সেইসাথে মুরতজা ভাইয়ের বৈধ লাইসেন্সকৃত পিস্তল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে রইজ আহম্মেদ মান্না সহ তার ২০/২৫ জন সহযোগী। অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে না পেরে সন্ত্রাসী মান্না ও তার সহযোগীরা মুরতজা ভাইয়ের অস্ত্র ধরে রেখে গুলির নাটক সাজায় এবং পুলিশকে ফোন করে থানায় সোপর্দ করে।
তিনি বলেন, ওই ঘটনায় অ্যাডভোকেট এ কে এম মুরতজা আবেদীন ভাইয়ের মোবাইল সহ পোর্ট রোডের সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই প্রকৃত ঘটনা পাওয়া যাবে। গতকালকের ঘটনায় বরিশাল সহ পুরো দেশবাসী এরইমধ্যে সত্য টা জানতে পেরেছে। কিন্তু অপরাধীরা এখনও বুক ফুলিয়ে চলছে শহরে, এদেরকে প্রতিহত করতে না পারলে আজকে মুরতজা ভাইয়ের মত আগামীতে আপনি, বা আমরা হব তাদের শিকার, তাই আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বিষয়টি তাৎক্ষনিক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানতে পেরেছেন। তারা এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন। আমরা এরইমধ্যে মামলা দায়েরের প্রস্তুতিও নিয়েছি। কিন্তু গতকাল থানা পুলিশ আমাদের পক্ষ থেকে মামলার কথা বলা হলেও তা নেয়নি।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি মুরতজা ভাইয়ের ওপর হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং সেটা রাজনৈতিক কারনে হতে পারে।
তিনি বলেন, বরিশাল জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি আজ ঐক্যবন্ধ আমাদের মধ্যে আজ কোন ভেদাভেদ নাই। এ কে এম মুরতজা আবেদীন ভাইয়ের মত সম্মানিত, সজ্জন ব্যাক্তির সাথে যে অন্যায় করা হয়েছে জাতীয় পাটি পরিবার তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। মুরতজা ভাইয়ের উপর হামলাকারী বরিশাল মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্না সহ তার সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানাই। মুরতজা ভাইয়ের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে জাতীয় পার্টি পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে এদের প্রতিহত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির নেতা বশির আহম্মেদ ঝুনু বলেন, পুলিশ আমাদের সহযোগীতা করছে কি না সেটা বলছি না। তবে তারা গতকাল মামলা নেয়নি। এমনকি মুরতজা ভাইয়ের লাইসেন্স করা পিস্তল রেখে দিয়ে তাকে অনিরাপদভাবে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমরা আশা করেছিলাম তার নিরাপত্তার জন্য বাড়ি পর্যন্ত পুলিশ যাবে। এখন আমরা আবারও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছি , সেটি থানা পুলিশ না নিলে আদালতে করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক ও বর্তমান নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে শ্রমিকলীগ বরিশাল মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্না বলেন, মুরতজা আবেদীন মিথ্যা কথা বলছে, আমি অস্ত্র ছিনিয়ে নেতে যাইনি, সে অস্ত্রের টিগারে হাতের আঙ্গুল দেয়া ছিলো যা ছবিতে স্পষ্ট।যদি তার অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার পরিস্থিতি হতো তাহলে আমি বলতাম না অস্ত্রটা পুলিশের হাতে দে। যা ওখানে শত শত লোকের মাঝে বলেছি এবং ভিডিওতেও প্রমাণ রয়েছে।
তিনি বলেন, সে প্রথমে ধীরে বলছে বাইচা আছো এরপর জোরে বলছে কেমন আছো। আমি জিজ্ঞাসাও করছি কারে বলছো, কারণ তার সাথে আমার কথা হয়না। আর এসব ভিডিওতে আছে।
মুরতজা তাকে উত্তেজিত করেছে জানিয়ে মান্না বলেন, অস্ত্র ছিনতাইয়ের চিন্তা থাকলে আমি সেটি আগেই নিতে পারতাম। আমার কথা হলো অস্ত্র বের করছে সে, সবকিছু আগেই করছে সে, অপরাধ করছে সে আর শাস্তি হবে আমার।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।